প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জনকে পেটালো আওয়ামী নেতা! – আসামি খুজে পাচ্ছেনা পুলিশ !

পছন্দের শিক্ষক প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে অস্বীকার করায় লালমনিরহাটে হরিদেব দয়েজ উদ্দিন হাইস্কুলের হেডমাস্টার মনোরঞ্জন রায়কে পিটিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা আবু সিদ্দিক। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। এসময় আওয়ামী লীগ নেতারা বেশ কয়েকজন স্কুল ছাত্রকে মারধর করে। ছাত্ররা তাদের শিক্ষককে পেটানোর সময় ঠেকাতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।


স্কুলটির হেডমাস্টার মনোরঞ্জন রায় (৫২) গত ২৬ বছর ধরে ওই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। আহত অবস্থায় মনোরঞ্জন রায়কে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শিক্ষককে পেটানোর ঘটনায় স্কুলটির ৩’শ ছাত্র তাদের ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি জানায়।

স্কুলটির দশম শ্রেণীর ছাত্র শরিফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে তাদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত থাকবে।

স্কুলটির শিক্ষক শাহ আলম বলেন, হরিদেব গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা আবু সিদ্দিকের নেতৃত্বে ৮ থেকে ১০ জন যারা আগে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল, এরা হেডমাস্টারের রুমে ঢুকে তাকে বেদম প্রহার করতে শুরু করে। তাদের হাতে লোহার রড ও লাঠি ছিল।
হেডমাস্টার মনোরঞ্জন ডেইলি স্টারের সাংবাদিককে জানান, আবু সিদ্দিক কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে শিরিনা আখতারকে নিয়োগ দিতে বলে। কিন্তু এ নিয়োগে আমি বেশ কয়েকবার অস্বীকৃতি জানাই। এজন্যে সে রেগে যায়। এসময় তার চোখে অশ্রুজল গড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন, আবু সিদ্দিকের সঙ্গে আসা লোকজন আমাকে নির্দয়ভাবে পেটাতে থাকে।

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুরুল হুদা মন্ডল জানান, কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে ১২ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন। তাদের আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

নুরুল হুদা মন্ডল জানান, সাবেক বিএনপি নেতা ও বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আবু সিদ্দিক সম্ভবত শিরিনা আখতারের কাছ থেকে মোট অংকের টাকা খেয়ে তাকে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্যে চাপ দিয়ে আসছিলেন।

নুরুল হুদা মন্ডল আরো জানান, আবু সিদ্দিক প্রথমে আমাকে তার পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে চাপ দিতে থাকে। কিন্তু সে ব্যর্থ হয়। এরপর সে তার লোকজন নিয়ে হেডমাস্টারকে পিটিয়ে আহত করে।

শিরিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আবু সিদ্দিক তার আত্মীয় হন। তবে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্যে তিনি আবু সিদ্দিকের কাছে কোনো সহায়তা চাননি। তবে আবু সিদ্দিক পলাতক থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি এমনকি তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের চিকিৎসক আজমল হক জানান, হেডমাস্টার তার পিঠে, দুই হাতে ও চোখে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

লালমনিরহাট সদর থানার সাব-ইন্সপেক্টর নিহার রঞ্জন রায় জানান, পুলিশ এই ঘটনায় জড়িতদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশী চালিয়ে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।আস

ডেইলি স্টার থেকে অনুবাদ

Post a Comment

Previous Post Next Post