কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালীতে মাদ্রাসা দখল করে সৈনিক লীগের কার্যালয় স্থাপনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ৩ সেপ্টেম্বর বৃহষ্পতিবার দুপুর ২ টার দিকে ভারুয়াখালী ইউনিয়নের ঘোনা পাড়া এলাকায় এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। অভিযোগে জানা যায়, ভারুয়াখালী ঘোনা পাড়া কালু রওশন দাখিল মাদ্রাসায় সম্প্রতি বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। এরপর থেকেই স্থানীয় একটি চক্র মাদ্রাসাটি দখলের পায়তারা শুরু করে। ষড়যন্ত্রটি আঁচ করতে পেরে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাষ্টার নজির আহমদ ষড়যন্ত্রে নেতৃত্বদানকারী মোজাফ্ফর আহমদ গংয়ের বিরুদ্ধে আদালতে পিটিশন দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত শুনানী শেষে বিবাদীদেরকে উক্ত প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন বিগত ৩১ আগষ্ট। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উক্ত বিষয়টি দেখার দায়িত্ব অর্পণ করেন থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই কাইয়ুমকে। ষড়যন্ত্রকারী উক্ত মোজাফ্ফর ইউনিয়ন সৈনিক লীগ আহবায়কের পদবী ব্যবহার করে এ পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে মাদ্রাসার ভবন দখল করে তাতে ইউনিয়ন সৈনিক লীগের কার্যালয় উদ্ধোধন ও মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও রহস্যজনক কারণে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনায় বাঁধা প্রদান না করে রহস্যজনক আচরণ করে। যার কারণে দখলদাররা ক্ষমতাসীন দলকে বিতর্কিত করতে দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসার ভবন দখল করে তাতে স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত ব্যানার ও সাইনবোর্ড ব্যবহার করে এ দখল প্রক্রিয়া চালায়। এ ঘৃণ্য ঘটনায় খোদ দলের মূল সংগঠন আওয়ামীলীগ, অঙ্গসংগঠন, ধর্মপ্রাণ এলাকাবাসীসহ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মুহুর্তে এ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা কাইয়ুমের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি দখলের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কপি পেয়ে তা তদন্ত করতে মাদ্রাসায় গেলে দেখা যায় বিবাদীরা মাদ্রাসার ভবনের কক্ষ দখল করে তাতে সৈনিক লীগের কার্যালয় উদ্ধোধন অনুষ্ঠান শুরু করে। পরে তার নির্দেশে কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ও ছবি তুলে ফেলা হয় বলে জানান। তবে গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সাংবাদিকরা সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে কার্যালয় সহ সাইনবোর্ড ও দেয়াল লিখন যথাস্থানে দেখা যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, মোজাফ্ফরের নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে ঐতিহ্যবাহী কালু রওশন দাখিল মাদ্রাসার নামটি পরিবর্তন করে তাতে বায়বীয় কিছু ব্যক্তির নামে নামকরণের অপ-পায়তারা করে ব্যর্থ হয়। ক্ষুদ্ধ এ চক্রটি মাদ্রাসার ভবন নির্মাণের নামে বহির্দেশের একটি সংস্থা থেকে কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। তা ধামাচাপা দিতে এসব ষড়যন্ত্র করছে এবং সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে ভবন দখল করে তাতে কার্যালয় উদ্ধোধন করে মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, যে ভোজনে অংশ নেয় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাইয়ুম, কনষ্টেবল শাহ আলম, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ জেলা সভপতি তৈয়ব উল্লাহ মাতবর, এনামুল হক, ফিরোজ, তৌহিদ, জাহেদসহ কতিপয় কুচক্রী। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি কামাল উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবী জানান। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক মেম্বার ফরিদুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সৈনিক লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে মাদ্রাসা দখলের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ কক্সবাজার জেলা সভাপতি তৈয়ব উল্লাহ মাতবরের সাথে যোগাযোগ করা হলে বলেন, শীঘ্রই উক্ত কার্যালয়টি সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দখলের মূল নায়ক ইউনিয়ন সৈনিক লীগের আহবায়ক দাবিদার মোজাফ্ফরের সাথে যোগাযোগ করা হলে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন এবং প্রয়োজনে মাদ্রাসাটি উচ্ছেদ করে তাতে স্থায়ী সৈনিক লীগ কার্যালয় প্রতিষ্ঠার হুমকি দেন।
উৎস : http://www.bd-monitor.net/newsdetail/detail/200/152386