দেশব্যাপী চলছে বিএনপির ডাকা অনির্দিষ্টকালের টানা অবরোধ কর্মসূচি। নির্দলীয় সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে ডাকা লাগাতার অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি চলছেই।
আর এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই ঘটছে নাশকতার ঘটনা। প্রতিদিনই নাশকতার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। কিন্তু কে বা কারা এবং কোন দলের কর্মীরা এসব নাশকতা ঘটাচ্ছে তা নিয়ে চলছে নানা বিতর্ক।
দেশের বড় দু’দলই এই সহিংসতার জন্যে এক পক্ষ অন্য পক্ষকে দুষছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে, চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় যারা মাঠ পর্যায় থেকে হাতে-নাতে ধরা পড়েছে তারা শুধু বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িতরাই নয়, আওয়ামী লীগ এর রাজনীতির সঙ্গে জড়িতরাও ধরা পড়ছে।
আর জামায়াত-শিবির কর্মীদের যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগই আটক হয়েছে নিজ আবাসস্থল থেকে এমনটি দাবি করছে দলটির শীর্ষ স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এদিকে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন আইডি থেকে স্ট্যাটাসে ‘বাসে হামলাকারি এবং পেট্রল বোমা নিক্ষেপের ঘটনাগুলোর তদন্ত ইন্টারপোলের অধীনে হবার দাবি জানানো হচ্ছে।
সহিংসতার বিষয়ে বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, যারা গাড়িতে আগুন দিচ্ছে, পেট্রল বোমা মেরে সহিংসতা সৃষ্টি করছে তারা বেশিরভাগই সরকার দলীয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তা নাকচ করা হচ্ছে।
শনিবার খালেদা জিয়া’র ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি জাতির সামনে ৩টি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন। আর তা হলো- রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ খুন করলে লাভ কার?
দোষ চাপানোর জন্য মিডিয়াকে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সেই মিডিয়ার উপরে নিয়ন্ত্রণ কার?
সবচেয়ে বড় কথা, বাসে আগুন দিয়ে মানুষ খুনের ঐতিহ্য কোন দলের?
আগে উত্তর দিন, তারপর দোষারোপ করুন।
বোমা বানানোর সময় বিস্ফোরিত হয়ে আহত হয়ে পরে মারা যাওয়া বাপ্পী ছাত্রদলের নেতা এমনটাই দাবী করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে, আর পুলিশের বরাত দিয়ে সেই খবর ঢালাও ভাবে প্রচার করা হয় মিডিয়াতে।
। তবে পরবর্তীতে অভিযোগ উঠেছে, বাপ্পী বিএনপির কর্মী নয়। বরং বাপ্পী ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী সেলিমের কর্মী বলেই জানে স্থানীয়রা। বাপ্পীকে একাধিকবার মতিঝিলে হাজী সেলিমের কোম্পানি মদিনা গ্রুপে গিয়ে টাকা আনতে দেখা গেছে বলে জানান বাপ্পীর এক সহযোগী। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে হাজী সেলিমের নির্বাচনে প্রচারণার কাজে বাপ্পীকে মাঠে থাকতে দেখা গেছে। জানা গেছে এসময় নির্বাচনের জন্য বোমা বানাতে তাকে ২ লাখ টাকা দেন হাজী সেলিম।
তবে এসকল অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিকবার তার সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অবশেষে ‘বাপ্পী আপনার হয়ে কাজ করতো’ কিনা জানতে চাইলে ঢাকা-৭ আসনের এই সাংসদ কিছুটা দাম্ভিকতার স্বরে বলেন, বাপ্পী সম্পর্কে আপনি যা ভালো মনে করেন লিখতে পারেন। তাতে আমার কিছু যায় আসে না।
এদিকে, নাশকতা বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সেক্রেটারি ওমর শরীফ জানান, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পেট্রল বোমা তৈরি এবং তা নিক্ষেপের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমকে। ওমর শরীফ নিজেও ভোলা-৩ এর সাংসদ শাওনের সহযোগিতায় বোমা তৈরির কাজ করছেন বলে এক গণমাধ্যমকর্মীকে জানিয়েছেন।
দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/২৫ জানুয়ারি ২০১৫।