আওয়ামী লীগ শুধু মানুষ খেকো নয়, বাংলাদেশ খেকো : খালেদা জিয়া

আর বাড়িতে আটকে রাখার চেষ্টা করবেন না। সাহস থাকলে রাজপথে মোকাবেলা করুন। সরকারকে এমন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোননেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জনগণের উদ্দেশে বলেছেন, আর চোখের পানি মোছার দিন নেই। এখন শীত গরম সব উপো করে রাজপথে নেমে আসতে হবে। আওয়ামী লীগ দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বোঝা সরাতে হবে।

আজ শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর বালুর মাঠে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে। সিভিল প্রশাসনকে দলীয়করণ করা হয়েছে। ভালো ভালো অফিসারকে চাকরি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে একজন অফিসারকে মিথ্যা অভিযোগে চাকরি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এই অত্যাচারী সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারলের দেশে শান্তি আসবে।

তিনি বলেন, নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে সরকার। জ্বালানি তেলের দামও বাড়াবে তারা। অন্তার্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে গেছে। আমি বলব এগুলো বাড়ানো যাবে না। যদি বাড়ানো হয় আমরা বসে থাকব না।

তিনি বলেন, আমরা জনগনের কথা চিন্তা করি। এখন দেশে কোনো কর্মসংস্থান নেই। শিল্পকারখানা বন্ধ হচ্ছে। বেকারত্ব বাড়ছে। যারা দেশেকে পেছনে নিয়ে যায় তাদের দিয়ে দেশের কিছু ভালো আশা করা যায় না। আওয়ামী লীগ কথায় একটা কাজে আরেকটা। যারা এমন করে তাদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, দেশ ধ্বংসের শেষপ্রান্তে এসেছে। পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে অপকর্ম করানো হচ্ছে। মানুষ গুম করানো হচ্ছে। সব পুলিশ বাহিনী খারাপ তা নয়। তাদের মধ্যেও দেশপ্রেমিক আছে। কিন্তু একটি বিশেষ জেলার ছাত্রলীগ-য্বুলীগকে পুলিশ বানিয়ে পুলিশের সুনাম ধ্বংস করা হচ্ছে। তাদের (পুলিশ) বলব শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে গুলি চালাবেন না। জনগণের সেবক হিসেবে থাকবেন। শত্রু হিসেবে নয়। আপনাদেরও ছেলেমেয়ে আছে। বিশেষ একটি জেলার পুলিশ নিজেরা অপকর্ম করছে। আওয়ামী লীগ মতায় টিকে থাকার জন্য যা ইচ্ছে তাই করছে। এমন করলে পাল্টা জবাব দেয়া হবে।

তিনি বলেন, অনেক হয়েছে । এইসব কাজ অনেক হয়েছে। ভবিষ্যতে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এদেশের মানুষ দেশের জন্য অনেক কঠিন হতে পারে। যেভাবে মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে সেভাবে মানুষকে হত্যার জন্য দেশ স্বাধীন করা হয়নি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা বলেন, আওয়ামী লীগ তো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি নয়। বিএনপি হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। কারণ শহীদ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার ডাকে সবাই মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার যুদ্ধ করে নাই। আমরা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। এটা জানতে হবে ছাত্র-যুব সমাজকে। তিনি (শেখ মুজিবর রহমান) স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি ফাঁসির ভয়ে।

২০ দলীয় জোট নেত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু মানুষ খেকো নয়, বাংলাদেশ খেকো। নারায়ণগঞ্জের সেভেন মার্ডারের খুনিরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যাদের ধরা হয়েছে তাদেরকেও রাখা হয়েছে জামাই আদরে। র‌্যাবের জিয়া হচ্ছে সবকিছুর হোতা। তার চাকরিতে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাকে চাকরিচ্যুত করতে হবে। নারায়ণগঞ্জে সাতজন নয় ১১ জনকে হত্যা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, ডিসেম্বর মাস বিজয়ের, এই মাস আনন্দের। কিন্তু মানুষের মনে আনন্দ নেই, কারণ তারা পদে পদে লাঞ্ছিত, গুম-হত্যার শিকার হচ্ছে।

দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪।

Post a Comment

Previous Post Next Post