কিশোরগঞ্জে মসজিদের দখল নিতে কৃষককে রগ কেটে হত্যা করেছে যুবলীগ নেতা।

কিশোরগঞ্জ ব্যুরো
যুবলীগ নেতা ও তার ক্যাডার বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত কিশোরগঞ্জ তাড়াইল উপজেলার জটারকান্দা গ্রামের কৃষক মো: দুলাল মিয়ার মৃত্যু হয়েছে।

ছয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে  ঢাকায় বক্ষব্যাধি হাসপাতালে মঙ্গলবার রাতে তিনি মারা গেছেন।

অভিযুক্ত কায়েস আহমেদ সোহরাব করিমগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান যুবলীগ নেতা।

করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির রাব্বানী কৃষক দুলাল মিয়ার মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন,  এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে পার্শ্ববর্তী করিমগঞ্জ উপজেলার দেহুন্দা গুদারাঘাট বৌ-বাজার থেকে হাটবাজার করে বাড়ি ফেরার পথে চর দেহুন্দা গ্রামের অধিবাসী উপজেলা যুবলীগ নেতা কায়েস আহমেদ সোহরাব ও তার সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী তার ওপর হামলা চালায়।

এ সময় হামলাকারীররা তার দুই পায়ের রগ কেটে দুই পা ও বাম হাতের বিভিন্ন স্থান ভেঙে দেয়। এছাড়াও হামলায় মাথায় রক্তাক্ত জখমসহ বুকের হাড় ভেঙে দেয় সন্ত্রাসীরা।

এক পর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে ভেবে ফেলে রেখে যায়।

পরে তাকে আশংকাজনক অবস্থায় প্রথমে করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে সেখান থেকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা।

অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।সেখান থেকে একইদিন ঢাকার পঙ্গু হাসপালে স্থানান্তর করা হয়।

মঙ্গলবার সেখান থেকে আশংকাজনক অবস্থায় তাকে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আনুমানিক ৯টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

ময়না তদন্তশেষে বুধবার বিকালে তার লাশ বাড়িতে এসে পৌঁছে। পরে পারিবারিক গোরস্তানে তাকে দাফন করা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, তাড়াইল উপজেলার সীমান্তবর্তী জটারকান্দা গ্রাম সংলগ্ন করিমগঞ্জ থানার দেহুন্দা ঈদগাহ মাঠে ছোটদের ক্রিকেট খেলা ও মসজিদের নেতৃত্ব নিয়ে ওই করিমগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ নেতা সোহরাবের পরিবারের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে এ বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আল আমিন বাদি হয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি যুবলীগ নেতা সোহরাব,তার ভাই ছোট মিয়া,খেলু মিয়া ও তার ছেলে শুভসহ তার ক্যাডার বাহিনীর ২৫/২৬ জনকে আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় একটি মামলা রুজু করেছেন।

বুধবার পর্যন্ত পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

নিহত কৃষকের পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা রাতের আঁধারে মালামাল সরিয়ে নিজেদের বাড়িঘর ভাংচুর করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কাউন্টার মিথ্যা মামলা দায়েরের পাঁয়তারা চালাচ্ছেন।

সূত্র : যুগান্তর
http://www.jugantor.com/online/country-news/2017/02/08/38963/

Post a Comment

Previous Post Next Post