জামায়াতে ইসলামীর ডাকে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে ||

ঢাকা: সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল শুরু হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমাদ এক বিবৃতিতে বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালনের ডাক দেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মীর কাসেম আলীকে হত্যার সরকারি ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ও তার মুক্তির দাবিতে বুধবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করছি।

হরতাল কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উপায়ে সফল করে তোলার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সকল শাখা এবং কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সুশীলসমাজ ও পেশাজীবীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ তথা দেশের আপামর জনতার প্রতি আমি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’

তবে অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস ও সংবাদপত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।

বিবৃতিতে মকবুল আহমাদ বলেন, ‘সরকার ষড়যন্ত্র করে পরিকল্পিতভাবে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে একের পর এক হত্যা করছে। সরকারি ষড়যন্ত্রের শিকার জনাব মীর কাসেম আলী। সরকার মিথ্যা, বায়বীয় ও কাল্পনিক অভিযোগে মীর কাসেম আলীর বিরম্নদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে নিজেদের দলীয় লোকদের দ্বারা আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ায়ে তাকে দুনিয়া থেকে বিদায় করার ষড়যন্ত্র করছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আদালত সরকারের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় সাজানো সাক্ষীর ভিত্তিতে আজ তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের যে রায় ঘোষণা করেছে তা একটি ন্যায়ভ্রষ্ট রায়। এ রায়ে মীর কাসেম আলী ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে তিনি রিভিউ আবেদন করবেন। ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে তিনি খালাস পাবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য বিচারের নামে যে প্রহসনের আয়োজন করেছে দেশে-বিদেশে তার কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। সরকারের মন্ত্রী ও সরকার দলীয় নেতাগণ গত কয়েক দিন যাবত দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিদের লক্ষ্য করে যে বক্তব্য রেখেছেন তা আদালতের ওপর এক নগ্ন চাপ সৃষ্টি করা ছাড়া আর কিছু নয় বলে দেশের জনগণ মনে করে।

মন্ত্রীদের এ বক্তব্যে মীর কাসেম আলী ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছিল। ট্রাইব্যুনালের বিচার থেকে শুরু করে আপিল বিভাগ পর্যন্ত এ মামলার বিভিন্ন সত্মরে সরকারের পড়্গ থেকে দফায় দফায় বিচারকে প্রভাবিত করার জন্য যে অবাঞ্ছিত ভূমিকা পালন করা হয়েছে তা বিচার বিভাগের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকারি পৃষ্ঠপোকতায় শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ স্থাপিত হওয়ার পর স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ‘সমাবেশের দাবি বিবেচনায় নিয়ে রায় দেয়ার জন্য বিচারপতিদের প্রতি আহ্বান জানান। ২০১৩ সালে তদানীন্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিশরে সফরে গিয়ে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও আব্দুল কাদের মোল্লার মামলায় রায়ের দিন ও তারিখ ঘোষণা করে বক্তব্য দেন। অতি সম্প্রতি সরকারের দুইজন মন্ত্রী মীর কাসেম আলীর মামলা নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে প্রমাণিত হয় সরকার মীর কাসেম আলীকে হত্যা করার জন্য অস্থির হয়ে পড়েছে। আমরা সরকারের এ জঘন্য ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

Post a Comment

Previous Post Next Post