রাজধানী সুপার মার্কেট এলাকায় বৃহস্পতিবার যুবলীগ নেতাসহ ১০ কর্মীকে চাঁদাবাজিকালে হাতেনাতে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছেন র্যাবের মোবাইল কোর্ট। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে চাঁদাবাজির প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার টাকা। র্যাব জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ওয়ারী থানাধীন রাজধানী সুপার মার্কেটে কয়েকজন চাঁদাবাজ বিভিন্ন দোকান থেকে চাঁদা আদায় ও ভাংচুর করছিল। খবর পেয়ে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম এবং র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে যায়। মোবাইল কোর্ট ঘটনাস্থল থেকে মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার চাঁদকাঠি গ্রামের হাফিজ হাওলাদারের ছেলে সানাউল করিম, তার সহযোগী মুন্সীগঞ্জের আবদুল হক (৫৪), গেন্ডারিয়ার এনায়েত হোসেন ওরফে বাবু (৪৮), চট্টগ্রামের কামাল উদ্দিন, মুন্সীগঞ্জের মো. আরিফ ও ফারুক হোসেন ওরফে বাবু, কুমিল্লার আহসানুল্লাহ, পটুয়াখালীর জহিরুল ইসলাম ওরফে জহির ও আলী হোসেন ওরফে মন্টু এবং ওয়ারী থানাধীন নবাবপুরের সাদাফ শাহরিয়ার হাসানকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির এক লাখ ৬০ হাজার ৬৯৫ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ৮ জনকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। তবে আসামি কামাল উদ্দিন ও আরিফকে দেড় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। গ্রেফতারকৃত সবাই যুবলীগের ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মী। আসামিদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অভিযানে সহযোগিতা করে র্যাব-১০ এর একটি দল।
সূত্র জানায়, যুবলীগের মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম-সম্পাদক সানাউল করিম দীর্ঘদিন থেকে রাজধানী সুপার মার্কেট ও আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি করে আসছিল। ঈদকে সামনে রেখে কোটি টাকার চাঁদাবাজির মিশনে নামে তারা। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় সম্প্রতি সানালাউল করিম ও তার দলবল রাজধানী সুপার মার্কেটের দুই ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে যায়। দু’দিন তাদেরকে আটকে রেখে চার লাখ টাকা আদায় করে। এছাড়াও রাজধানী সুপার মার্কেটের প্রত্যেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এক থেকে দেড় লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করে। রাজধানী সুপার মার্কেট ছাড়াও টিকাটুলি, ওয়ারী, কাপ্তানবাজার, নবাবপুর রোডের আশপাশের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে রেজাউল করিম ও তার সহযোগীরা। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে মারধর, তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে অর্থ আদায় করত এই গ্র“পটি। তারা পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক্সের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদাবাজি করছিল। এসব অভিযোগ জানার পর র্যাব কৌশলে প্রথমে সানাউল করিমকে আটক করে। তার তথ্যের ভিত্তিতে চাঁদাবাজিকালে অপর সহযোগীদের হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতার ও সাজা দেয়ার মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।
উৎস : http://www.jugantor.com/first-page/2015/07/10/291714