স্বাধীনতা যুদ্ধের পর যারা জহির রায়হানকে অপহরণের পর হত্যা করেছে তারাই বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর সেক্রেটারি নূরুল ইমলাম বুলবুল।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বুলবুল বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক শহীদুল্লাহ কায়সারের ভাই জহির রায়হারের অন্তর্ধান এখনও রহস্যাবৃত। তার কী পরিণতি হয়েছে এখন পর্যন্ত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জহির রায়হান বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন বলেই রহস্য প্রকাশ হওয়ার আগেই তাকে অপহরণ ও হত্যা করা হয়েছে। ধারণা করা হয়, জহির রায়হারের কাছে মুক্তি যুদ্ধের বিভিন্ন দলিল-দস্তাবেজ, ডকুমেন্টারি ও প্রামাণ্য চিত্র সংরক্ষিত থাকার কারণেই তাকে অপহরণ ও পরবর্তীতে হত্যা করা হয়েছে। এসব তথ্য-উপাত্ত জাতির কাছে প্রকাশ পেলে যাদের থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসার আশঙ্কা ছিল, মূলত তারাই এসব হত্যাকা- ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।
তিনি বলেন, বুদ্ধিজীবীরা দেশের শ্রেষ্ট সম্পদ। তাদের মেধা, মনন, প্রজ্ঞা ও মনীষা দেশ ও জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে মহান বিজয়ের মাত্র ২ দিন আগে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে জাতিকে মেধাশুণ্য করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। স্বাধীনতার ৪ দশক পরেও দেশপ্রেমিক বুদ্ধিজীবীরা নানাভাবে জুলুম-নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন। বুদ্ধিজীবী হত্যাকা- ও অপহরণের ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত জাতি তা জানতে চায়।
জামায়াত নেতা বলেন, ক্ষমতাসীনরা শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা না করে এই ইস্যুকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের হাতিয়ার বানিয়েছে। সরকারের অপরাজনীতির অংশ হিসাবেই বিচারের নামে প্রহসন করে বিশিষ্ঠ বুদ্ধিজীবী আব্দুল কাদের মোল্লা ও মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। সরকারের জিঘাংসা ও প্রতিহিংসা চরিতার্থের অংশ হিসেবেই আলী আহসান মোহম্মদ মুজাহিদকে অন্যায়ভাবে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য মোঃ সাদেক বিল্লাহ, জামায়াত নেতা আ জ ম রুহুল কুদ্দুস, ড. আব্দুল মান্নান, আবুল কাসেম, মোঃ বাহার, মনির হোসেন ও শাহজাহান খান প্রমুখ।