খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হবে না : শেখ হাসিনা ||

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। দলীয় সংসদ সদস্যদের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি তাদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন।
রোববার রাতে জাতীয় সংসদ ভবনের নবম তলায় অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় সংসদ সদস্যরা সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানুষ পুড়িয়ে মারার দায়ে খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ওই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন।

বৈঠকে সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী সরকারকে আরও কঠোর অ্যাকশনে গিয়ে খালেদা জিয়াকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রেফতার করলে তো এখনি করা যায়। কিন্তু আমরা ধৈর্যের পরিচয় দেব। আগে দেশের কথা ভাবতে হবে। তাই ধৈর্য ধরতে হবে। সবকিছু সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার প্রয়োজন নেই।

বৈঠকে সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী অবরোধ ও হরতালের নামে চলমান সহিংসতার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, এ অবস্থায় এসএসসি পরীক্ষা পেছানো ঠিক হল না। কারণ আমরা তো সব গুছিয়ে এনেছিলাম।

জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, খালেদা জিয়া যা করছেন তা জঙ্গি কার্যকলাপ। তবে পরীক্ষার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত সঠিক। ছাত্রছাত্রীর জীবন নিয়ে চ্যালেঞ্জে যাওয়া ঠিক হতো না।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ঠিক পথেই আছি। ক্ষমতার চেয়ে আমাদের সন্তানদের কথা ভাবতে হবে। জেদাজেদি করতে গিয়ে কোনো বাচ্চার ক্ষতি হলে সেটা পূরণ করা সম্ভব নয়। এজন্য মানুষ সরকারকে দায়ী করবে। এই ইস্যুতে আমরা যা করেছি তা শতভাগ সঠিক বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবরোধের নামে বিএনপি-জামায়াত যে নাশকতা করছে, তার বিরুদ্ধে সরকার কাজ করছে। সুতরাং এ নিয়ে আপনারা চরম প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। তিনি খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে আরও বলেন, তার কপালে অনেক দুঃখ আছে। চাইলে তার বিরুদ্ধে অনেক কিছুই করতে পারি। কিন্তু এই মুহূর্তে কিছু করতে চাই না।

এক ঘণ্টারও কিছু বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সরকারি দলের এমপিদের বর্তমান পরিস্থিতিতে এলাকায় গিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সচেতন থেকে নাশকতা প্রতিরোধে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেন দলের এমপিদের। এসএসসি পরীক্ষার ব্যাপারেও সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশ দেন তিনি।

বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সিনিয়র নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু, নারায়ণগঞ্জের এমপি শামীম ওসমান প্রমুখ।সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বর্তমান পরিস্থিতিতে সংসদ অধিবেশন দুই সপ্তাহের জন্য মুলতবি রাখার পরামর্শ দিয়ে এমপিদের নিজ নিজ এলাকায় পাঠানোর দাবি জানান। তবে প্রধানমন্ত্রী এ প্রস্তাবে সাড়া দেননি। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সহিংসতা দমনে পৃথক আইন প্রণয়নের পরামর্শও দিলেও তা গ্রহণ করেননি প্রধানমন্ত্রী।

দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।

Post a Comment

Previous Post Next Post