ধারাবাহিক প্রবন্ধ ইতিহাসের পাতায় আল্লামা সাঈদী পর্ব : ০১ ||

আল্লামা সাঈদীর সংক্ষিপ্ত জীবনী :

আল্লামা দেলাওয়ার সাঈদী ১৯৪০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মাওলানা ইউসুফ সাঈদী দক্ষিণ অঞ্চলের একজন শৈল্পিক বক্তা ও পীর। তিনি নিজ গ্রামে বাবার নির্মিত মাদ্রাসা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা নেন। এর পর তিনি শার্ষিনা আলিয়া ও খুলনা আলিয়া মাদরাসায় অধ্যয়ন করেন। ১৯৬২ সালে শার্ষিনা আলিয়া মাদরাসা থেকে কামিল ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি বিভিন্ন বিষয়ে ও তত্ত্বের ওপর অধ্যয়ন করেন। তিনিভাষা, ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান, রাজনীতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, মনোবিজ্ঞানের মতো বিষয় প্রায় পাঁচ বছর অধ্যয়ন করেন।

আল্লামা সাঈদী তার জীবন শুরু করেন দায়ী ইলাল্লাহ হিসেবে ১৯৬৭সালে। তিনি দেশ ও বিদেশে কোরআনের দাওয়াত দিতে থাকেন। তার এ দাওয়াতি মিশন থেকে কোনো বাধা- বিপত্তি তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। কোরআনের দাওয়াত দেয়ার অপরাধে ১৯৭৫ সালে ফ্যাসিবাদী মুজিব সরকার তাকে জেলে বন্দি করে রাখে। মুজিব সরকারের পতনের পর তিনি মুক্ত হন।

মওলানা সাঈদী পৃথিবীর প্রায় পঞ্চাশটি দেশে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার আহ্বানে ইসলামের দাওয়াতি কাজে ভ্রমণ করেছেন। ১৯৭৬ সালের পর থেকে প্রতি বছর তিনি সৌদি সরকারের রাজকীয় অতিথি হিসেবে হজব্রত পালন করে আসছেন।

তিনি নামকরা একজন লেখক ও শিক্ষাবিদ। তার রচিত তিরিশটি বই প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে দুটি বইয়ের বর্তমানে ইংল্যান্ড ও আমেরিকার বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

মওলানা সাঈদী একজন জননন্দিত নেতা। ১৯৯৬ সালে তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলা থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯৬ সালে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচিত তিনজন সদস্যের সংসদীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার বলিষ্ঠ বক্তৃতার মাধ্যমে তিনি তৎকালীন আওয়ামী সরকারের সব দুষ্ককর্মের সমুচিত জবাব দেন। ২০০১ সালে তিনি ফের সংসদ সদস্য
নির্বাচিত হন।

দেশ-বিদেশে তাফসীর মাহফিলের সঙ্গে সঙ্গে সাংগঠনিক কাজও
চালিয়ে যেতে থাকেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীরের দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি সক্রিয় ভাবে বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত।তিনি রাবেতা আলম আল ইসলামের উপদেষ্টা, ইসলমী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের শরিয়াহ কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টিবোর্ড চট্টগ্রামের উপদেষ্টা, ইসলামিয়া ­দ্বীনিয়া টঙ্গী, জামিয়া কাসেমিয়া নরসিংদী, দারুল কোরআন সিদ্দিকিয়া আলিয়া মাদরাসা খুলনা, দারুল হামান শিশু সদন, এস বি মদীনাতুল উলুম কামিল মাদরাসা পিরোজপুরের চেয়ারম্যান।

এছাড়া তিনি দেশি ওবিদেশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সংগঠনের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের আজীবন সদস্য।

আল্লামা সাঈদী একজন জনপ্রিয় নেতা। তিনি ইসলামী গণ্ডিতে অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তার কোরআনের তাফসীর শুনে প্রায় ছয়শ’ অমুসলিম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। এক কথায় আল্লামা সাঈদী ইতিহাসের পাতায় লেখা এক নাম।

এডমিন- দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

চলবে →

Post a Comment

Previous Post Next Post