সিলোনিয়া প্রতিনিধি : গতকাল দাগনভূইঁয়া উপজেলার ৮নং জয়লস্কর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে যুব সমাজের উদ্যোগে সিলোনিয়া হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাষ্টার আলী আশরাফ সাহেবের সভাপতিত্বে, বিশেষ মেহমান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জনাব মামুনুর রশিদ মিলনের উপস্থিতিতে তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে প্রধান মেহমান বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ তরুন প্রজন্মের হৃদয়ের স্পন্দন কুমিল্লা রেসকোর্স মসজিদে ক্বোবার সন্মানিত খতিব আল্লামা হযরত মাওলানা মোল্লা নাজিম উদ্দিন সাহেব কোরআনুল কারিম থেকে তাফসীর শুরু করেন।
প্রধান মেহমান, কোরআন হাদীসের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, কোরআন সুন্নাহর আইন প্রতিষ্ঠায় যুবকদেরকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এই যুবেকেরাই ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য সব চাইতে বেশী ভূমিকা পালন করেছে। যুবকদেরকে মনে রাখতে হবে মুমিনদের জন্য আল্লাহর কোরআন এবং রাসুল (সাঃ) এর পূর্ণ অনুসরণই দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতা।
আমরা যারা কোরআনের মাহফিল করি, আমাদের কোনো দলাদলি নাই, মত নাই, নেতার পুজা নাই, কোনো নেতার নামে স্লোগান নাই। তবে হ্যাঁ আছে! আমাদের একটা দল আছে, যে দলের নাম আল্লার দল, আমাদের একটা মত আছে, যে মতের নাম আল কোরআন, আমাদের একটা নেতা আছে, যে নেতার ছাইতে আকাশের নিচে জমিনের উপর আর কোনো নেতা হতে পারেনা যার আদর্শের সার্টিফিকেট সয়ং আল্লাহ তায়ালা দিয়েছন, তিনি হচ্ছেন জনাব মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ)।
যারা আল্লাহু আকবারের স্লোগান দেয়, যারা কোরআনের স্লোগান দেয়, রাসুলের নামে স্লোগান দেয়, আমারা তাদের দলে আছি। যারা এসবের বিরুদ্ধে আমারা তাদের দলে নাই।তিনি আবু জাহিলের কথা বলতে গিয়ে বলেন, আবু জাহিল কুরআন শুনতে ভালো বাসতেন কিন্তু মানতেন না। আজকে আমাদের দেশেও বড় বড় আবুল নামের জাহিলদের পয়দা হয়েছে যারা কুরআন পড়েন, কুরআন শুনেন, কিন্তু কুরআনের শাসন চান না, আইন মানেন না। আবু জাহেল কুরআন শুনতে ভালোবাসতেন মানতেন না। আমি তখনকার আবু জাহিল আর এখনকার আবু জাহিলের মধ্যে কোনো পার্থক্য খুঁজে পাই না। আপনারা পান কিনা ? এক আবুল পদ্মা সেতু খাইছে, আরেক আবুল বিড়ি বানাই পুরা দেশটা খাইছে, আরেক আবুল কোরআনের বিরুদ্ধে কথা বলে আবার মাহফিল শুনতে যায়, জুতার বাড়ি খেয়ে পুলিশ পাহারায় পালাই আসে।
তিনি বলেন, আমরা কোরআন বিরুধী ইসলাম বিরুধী মাহফিল বিরুধী ইসলামী আন্দোলন বিরুধী হবো না। আমরা কোরআন সুন্নার আইন প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা যখন তাফসীর মাহফিলে কোরআনের কথা রাসুল (সা:) এর কথা কোরআন বিরুধী ইসলাম বিরুধী মোনাফেকদের বিরুদ্ধে কথা বলি তখন মুসলমান নামদারি এক শ্রেণীর মোনাফেকরা বলে আমরা ধর্মের নামে রাজনীতি করি। তিনি বলেন, আমরা ধর্মের নামে রাজনীতি করিনা, আমরা ধর্মীয় রাজনীতি করি। কোরআনের কথা রাসুল (সা:) এর কথা কোরআন বিরুধী ইসলাম বিরুধী মোনাফেকদের বিরুদ্ধে কথা বলা যদি আমাদের রাজনীতি হয়, তাহলে এই রাজনীতির জন্য ফাঁসির মঞ্চে যেতেও আমরা রাজি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই রাজনীতি আমরা করেই যাবো।
তিনি আরো বলেন, আজ কোরআনের বিরুদ্ধে, ইসলামের বিরুদ্ধে, আলেম ওলামার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। আলেমদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে নিয়ে রিমান্ডের নামে নির্যাতন করা হচ্ছে। রাসুল (সাঃ) কে গালি দেওয়া হচ্ছে, মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, ইসলাম বিরুধী কার্যকলাপ করছে সরকার তাদের বিচার না করে তাদেরকে মদদ দিচ্ছে, তাদেরকে গ্রেফতার না করে হক্কানী আলেমদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, তিনি সরকারকে হুশিয়ারি করে বলতে চান, অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন, নবী রাসুলদের জামানায় এ রকম নির্যাতন করা হয়েছে, আজও হচ্ছে, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা সকল জালিমকে উচিৎ শিক্ষা দিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিয়েছন।
আপনারাও যদি ইসলাম বিরুধীদের পক্ষ ত্যাগ না করেন আল্লাহর আযাব আর গজবের জন্য অপেক্ষায় থাকুন। তিনি ফেরাউনের কথা সরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ফেরাউনের চাইতে তো শক্তিশালী হন নাই, আমার আল্লাহ ফেরাউনকে পানিতে চুবাইয়া বিদায় করেছন, নমরুদকে জুতা পিটা করে বিদায় করেছেন, আপনাদের অবস্থা এর ব্যতিক্রম হবেনা। কোরআনের পক্ষে থাকুন বিজয় সু নিশ্চিত।
তিনি মাহফিলের উপস্থিতি সকলকে কোরআন সুন্নার আইন প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানিয়ে কোরআনের ছায়াতলে সমবেত হয়ে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের সাথে ঐক্যবদ্ধ থাকার তাগিদ দেন।
পরিশেষে মুসলিম উম্মার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া কামনা করে মুনাজাত পরিচালনা করেন।
দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/ ১৮ জানুয়ারী ২০১৫।