শহীদ কাদের মোল্লার রক্ত বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনের জন্য জমিনকে উর্বর করছে -মাওলানা আব্দুল হালিম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার শাহাদাত কবুলের জন্য গতকাল শুক্রবার ঢাকা মহানগরী জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন দলের ও ঢাকা মহানগরীর নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল হালিম।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল হালিম বলেছেন, শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার রক্ত বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনের জন্য জমিনকে উর্বর করছে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা শাহাদাতের প্রেরণা পেয়েছেন। মূলত শাহাদাতের মাধ্যমে মানুষের মৃত্যু হয় না বরং শহীদরা আল্লাহর নিকট থেকে নতুন জীবন লাভ করেন এবং জান্নাতপ্রাপ্তি নিশ্চিত হয়। শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা তার সালাত, কোরবানী, জীবন ও মৃত্যু আল্লাহর রাহে বিলিয়ে দেয়ার জন্য যে শপথ গ্রহণ করেছিলেন তার শাহাদাতের মাধ্যমে সে শপথের চূড়ান্ত অভিব্যক্তি প্রকাশিত হয়েছে। তাই ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে শহীদ আব্দুল কাদের শাহাদাত থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার শাহাদাত কবুলিয়তের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি দোয়া দিবসে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী আয়োজিত শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার শাহাদাত বাষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, ঢাকা মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দীন ও আব্দুস সবুর ফকির প্রমূখ।

মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার শাহাদাতের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে হত্যা-সন্ত্রাস, জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে ইসলামের অগ্রযাত্রা রোধ করা যায় না। সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষ ১০ নেতা ও অসংখ্য ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে দীর্ঘদিন অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। সরকারের সীমাহীন জুলুম-নির্যাতনের কারণেই কারাগারেই আল্লাহর মেহমান হয়েছেন বিশ্ববরেণ্য ইসলামী চিন্তাবিদ, ইসলামী আন্দোলনের প্রাণ পুরুষ ও সাবেক আমীরে জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আযম ও নায়েবে আমীর মাওলানা এ কে এম ইউসুফ। সরকারের উপর্যুপরি জুলুম-নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় ইন্তিকাল করেছেন ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম সিপাহসালার ও নায়েবে আমীর অধ্যাপক এ কে এম নাজির আহমদ। কিন্তু জুলুম-নির্যতন চালিয়ে ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রা কখনো রোধ করা যায়নি, আর কখনো যাবেও না। তিনি সরকারের জুলুম-নির্যাতন মোকাবেলায় সবর ও ইস্তিশামাত অবলম্বনের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, মূলত সকল আইনী অনুসঙ্গ সম্পন্ন না করেই তড়িঘড়ি করে রজনৈতিক প্রতিহিংসায় শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার দন্ড কার্যকর করে সরকার প্রতিহিংসার পরিচয় দিয়েছে। ফলে প্রমাণিত হয়েছে যে সরকার জামায়াতকে নেতৃত্বশূন্য করার হীন উদ্দেশ্যেই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নামে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ সরকারের সে স্বপ্নবিলাস কখনোই বাস্তবায়িত হবে দেবে না বরং সরকারের জুলুম-নির্যাতন মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তিনি আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ কারারুদ্ধ শীর্ষ নেতাদের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু কামনা ও অধ্যাপক গোলাম আযম, মাওলানা একেএম ইউসুফ, অধ্যাপক একেএম নাজির আহমদ ও আব্দুল কাদের মোল্লার শাহাদাত কবুলের জন্য দোয়া করেন।

মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, সরকার শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাকে শহীদ করার মাধ্যমে আমাদের ইতিহাসকে রক্তাক্ত ও কলংকিত করেছে। একজন জাতীয় নেতাকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে ইতিহাসে নজিরবিহীন। কিন্তু জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে ও হত্যা করে ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রা রোধ করা যাবে না বরং স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়ে শহীদের রক্তের বদলা নেয়া হবে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

Post a Comment

Previous Post Next Post