নোয়াখালী : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের নির্যাতনে জামাল হোসেন (৩৫) নামের এক যুবদল নেতার মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের তুলাচারা গ্রামের মৃত মোবারক উল্যাহর ছেলে ও ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক।
বুধবার সকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী, এলাকাবাসী ও আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা দোষী পুলিশ সদস্যদের বিচার দাবি করেছেন। তবে নির্যাতনে যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, গত বছরের ৯ আগস্ট তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ হয়। এ ঘটনায় মুন্সির বাড়ির মৃত কালা মিয়ার ছেলে মো. সিরাজ বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় একই বছর ৭ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের করেন। যার নং-০৮।
এই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা পেয়ে থানার এসআই আবদুল হাই জামালকে চলতি বছরের ২০ নভেম্বর তার ঘর থেকে গ্রেফতার করেন। এ সময় তাকে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
৯ দিন জেল খেটে গত ১ ডিসেম্বর জামাল জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়িতে আসার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুধবার সকালে তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পরিবারের লোকজন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জেল হাজতেও সে অসুস্থ ছিল বলে জানিয়েছেন তার সঙ্গে গ্রেফতার অপর আসামি ফরহাদ।
তিনি জানান, সেদিন গ্রেফতার করার পর পুলিশ পথে পথে আমাদের নির্যাতন করেছে।
নিহত জামালের মা আয়েশা বেগম, স্ত্রী আলেয়া বেগম ও ভাই কামাল জানান, পুলিশের ভয়ে সে ঘরের দরমার উপর উঠে যায়। সেখান থেকে পুলিশ তাকে ধরে এনে আমাদের সামনেই পায়ের বুট দিয়ে লাথি মারে, রাইফেলের বাট দিয়ে ঘাড়ে, বুকে, পিঠে আঘাত করে। এতে তার নাক, মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে যায়। তাকে এই অবস্থায় মারতে মারতে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়। পুলিশের নির্যাতনেই জামালের মৃত্যু হয়েছে বলে তারা দাবি করেছেন। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রতিপক্ষ পুলিশ দিয়ে জামালকে হত্যা করেছে বলেও তারা অভিযোগ করেছেন। অসহায় জামালের পরিবার অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিচার দাবি করেছে।
অভিযুক্ত এসআই আবদুল হাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গ্রেফতারি পরোয়ানা পেয়ে জামালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে নির্যাতন করা হয়নি। অসুস্থ হলে কোর্ট তাকে রিসিভ করতো না। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ঠিক নয়।
বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় এ ব্যাপারে জানার জন্য বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইনুল হক ও নোয়াখালী পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরীফকে একাধিক বার ফোন দিলেও তারা মোবাইল রিসিভ করেননি।
দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/০৩ডিসেম্বর ২০১৪