প্রিয় সাঈদী,
কেমন আছেন জানি না ।
শুনেছি কারাগারে ছোট্ট এক প্রকোষ্ঠে তোমাকে রাখা হয়েছে । গায়ে কয়েদীর পোশাক ।
জানি না কী খেতে দেয় তোমায় । কেমন আচরণ করে কারারক্ষীরা তোমার সাথে।
তুমিতো জানোনা মাওলানা,
তোমার অন্যায় ফাঁসির রায়ে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল কী যে উত্তাল হয়ে উঠেছে !
১০০ জনের উপর মুসলমান বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে শুধু দু’ দিনেই ।
অবাক হয়ো না মাওলানা ।
সারাজীবন তুমি তাদেরকে পবিত্র কুরআন ও হাদিস থেকে অনেক কিছু শিক্ষা দিয়েছ ।
তুমিই তাদের শিখিয়েছ অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে ।
তুমিই তাদের উৎসাহিত করেছ শহীদী মৃত্যুর জন্য ।
তাই আজ তোমারই প্রতি করা অন্যায়ের প্রতিবাদে তারা জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ।
প্রাণ বিলিয়ে দিচ্ছে অকাতরে ।
প্রিয় নেতা,
ফাঁসির আদেশ পৃথিবীতে এ অবধি কত বড় বড় আলেমের বিরুদ্ধেই তো হয়েছে।
তাদের কে কারো কারো ফাঁসি দেয়াও হয়েছে । তারা সকলেই গর্বিত মুখে ফাঁসিকাস্ঠে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ।
অন্যায় ও জুলুমের প্রতিবাদ করার জন্য, সত্য কথা বলার জন্য তাদের ফাঁসি হয়েছে ।
কিন্তু,
তোমাকেতো ফাঁসি দেয়া হয়েছে জঘন্য এক মিথ্যা অপবাদের ভিত্তিতে । যার সাথে তোমার বিন্দুমাত্র যোগসূত্র নেই ।
মাওলানা গো,
এইজন্য হয়তো তোমার মনটা ছোট হয়ে আছে ।বুকের ভেতর অনেক চাপা অভিমান জমে আছে ।
দুঃখ করো না তুমি প্রিয় নেতা, বাংলার মানুষ একথা বিশ্বাস করেনি, করবেও না কখনো ।
তারা কত ভালোবাসে তোমায়
তুমি তা কল্পনাও করতে পারবে না কখনো ।
তাদের চিন্তা-চেতনায়, কল্পনায়, অস্তিত্বে এতটাই তুমি মিশে আছে, এতটাই যে,
মাঝরাতে চাঁদের শুভ্র বুকেও তোমার নিষ্পাপ মুখ দৃষ্টিভ্রমে দেখতে পায় তারা ।
মাওলানা গো,
কতকাল দেখিনা তোমাকে সরাসরি স্টেজে, চিরপরিচিত সেই দরাজ গলায় সূচনা করছো,
‘নাহমাদুহু অনুসাল্লি আলা..........’
তারপর বলছ,
‘জোরে-শোরে মহব্বতের সাথে পড়ুন, বালাগাল উলা বে কামালিহি..........’
জীবনে আর কি কোনদিন তোমাকে দেখবোনা স্টেজে? আর একটিবারের জন্য ?
আল্লাহ কি তোমাকে জুলুম এই শাসকের ফাঁসির দড়ি থেকে বাঁচিয়ে
আর একটি বারের জন্য আমাদের সামনে এনে হাজির করবে না ?
আমাদের জন্য দোয়া কর তুমি, প্রিয় সাঈদী ।
আমরা আমাদের রক্তের শেষ বিন্দু দিয়ে হলেও তোমাকে ফাঁসির দড়ি থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করবো ।
ইনশাআল্লাহ্ ।
ভালো থেকো প্রিয় নেতা ।
ইতি,
তোমারই ভক্ত ও গুনমুগ্ধ
বাংলাদেশের আপামর জনতা