মাননীয় আদালত,
আমি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী,
৫৬ হাজার বর্গ মাইলের এই বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা উপজেলার আপামর জনগণের অতি পরিচিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। আল্লাহ সাক্ষী, তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দীনের রচিত দেলোয়ার শিকদার বর্তমান সাঈদী বা দেলোয়ার শিকদার ওরফে দেলু ওরফে দেইল্যা রাজাকার আমি নই।
গণতন্ত্রের লেবাসধারী বর্তমান আওয়ামী সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বশতঃ যুদ্ধাপরাধের দায় চাপানোর মিশন নিয়ে হেলাল উদ্দিনকে আমার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে ।
মিথ্যাচার প্রতিষ্ঠায় স্বনাম খ্যাত হেলাল উদ্দীন আমার বিরুদ্ধে ২০টি জঘন্য মিথ্যা অভিযোগ এনে সরকারি ও দলীয় আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে গিয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমার নাম বিকৃত করেছে।
আমার পারিবারিক পরিচয়, শিক্ষাগত যোগ্যতা, ছাত্র জীবন থেকে শুরু করে লুটেরা, খুনি, ধর্ষক, নারী সরবরাহকারী, অগ্নি সংযোগকারী পাক বাহিনীর দোসর, দুর্ধর্ষ রাজাকার, এক কথায় এই তদন্ত কর্মকর্তা মনের মাধুরী মিশিয়ে ৪ হাজার পৃষ্ঠার নাটক রচনা করেছেন আমার বিরুদ্ধে।
কোন মুসলমানের কলিজায় সর্ব শক্তিমান আল্লাহর ওপর বিন্দু পরিমাণ বিশ্বাস থাকলে, মৃত্যুর ভয় থাকলে, পরকালে আল্লাহর নিকট জবাবদিহিতার ভয় থাকলে, জাহান্নামের কঠিন শাস্তির ভয় থাকলে অন্য কোন মুসলমানের বিরুদ্ধে শুধু আদর্শিক ও রাজনৈতিক শত্রুতার কারনে এতো জঘন্য মিথ্যাচার করা আদৌ সম্ভব হতো না।
মাননীয় আদালত,
আজকের এই বিচার প্রক্রিয়া নিঃসন্দেহে দুটি পর্বে শেষ হবে। একটি এই জাগতিক আদালতে আর অপরটি আখেরাতের আদালতে ।
আজ আমি এই আদালতের অসহায় এক নির্দোষ আসামি আর আপনারা বিচারক।
রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পূরণে ক্ষমতার জোরে আমার প্রতি যদি জুলুম করা হয়, তাহলে আজকের দুর্দান্ত প্রতাপশালী ব্যক্তিবর্গ যারা একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে আদর্শিক কারণে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে আমার প্রতি জুলুমের প্রয়াস পাচ্ছেন তারা দ্বিতীয় পর্বের বিচারের দিন, কিয়ামতের দিন তারা নিঃসন্দেহে আসামি হবে । সেদিন আমি হবো বাদী । আর সর্ব শক্তিমান, রাজাধিরাজ, সম্রাটের সম্রাট, আকাশ ও জমিনের সার্বভৌমত্বের একচ্ছত্র অধিপতি, সকল বিচারের মহাবিচারপতি আল্লাহ রব্বুল আলামীন তিনিই হবেন সেদিনের আমার দায়ের করা মামলার বিচার প্রক্রিয়ার বিচারক ।
সুরা আত-ত্বীনের ৮নং আয়াত আল্লাহ তা’য়াল বলেছেন,
‘আল্লাহ তায়ালা কি সকল বিচারকের তুলনায় শ্রেষ্ঠ বিচারক নন ?’।
সুরা দোখানের ১৬ নং আয়াতে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, ‘একদিন আমি এদেরকে অবশ্যই কঠোরভাবে পাকড়াও করব এবং নিশ্চয়ই প্রতিশোধ নেবই ।’
মাননীয় আদালত,
আপনাদের এই আদালতে বসে যার হাতের মুঠোয় আমাদের সকলের জীবন, সেই মহাশক্তিধর আল্লাহ তা’য়ালার নামে শপথ করছি। তাঁর পবিত্র কুরআন স্পর্শ করে কসম করে বলছি, আমার নামে আপনাদের এ আদালতে যতগুলো অভিযোগ আনা হয়েছে তার হাজার কোটি মাইলের মধ্যে আমার অবস্থান ছিল না। উত্থাপিত অভিযোগের একটি বর্ণনাও সত্য নয়।
আল্লাহর কসম ! সব ঘটনা বা দুর্ঘটনার সাথে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আমার নাম যোগ করা হয়েছে। এ সকল অভিযোগের সাথে আমার দূরতম সম্পর্ক নেই।
মাননীয় আদালত,
আমি আশা করি সকল প্রকার রাগ- অনুরাগ ও সকল প্রকারের চাপ ও আদেশ নির্দেশের উর্ধ্বে উঠে সত্য ও মিথ্যা সার্বিকভাবে বিবেচনায় নিয়ে সকল প্রকার প্রভাব মুক্ত হয়ে শুধুমাত্র মহান আল্লাহকে ভয় করে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে বাঁচার লক্ষ্যে আমার প্রতি জুলুম না করে ন্যায়বিচার করবেন। মহান আল্লাহ আপনাদের সে তওফিক
দান করুন ।
সুতরাং আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পূরণে যিনি যতটা ষড়যন্ত্র করে, জঘন্য থেকে জঘন্যতর মিথ্যা মামলা দিয়ে, মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে, মিথ্যা সাক্ষীর প্রশিক্ষন দিয়ে আমাকে মানসিক যন্ত্রনা দিয়েছেন, দেশ- বিদেশে অসংখ্য অগুনতি মানুষের কাছে কোরআনের বাণী পৌঁছানোর ক্ষেত্রে আমাকে বঞ্চিত করেছেন, আমার প্রিয়জনদের কাঁদাচ্ছেন, কলঙ্কের তিলক পরিয়ে আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন, আমি দোয়া করি আল্লাহ তাদের হেদায়াত করুন। আর হেদায়াত যদি তাদের নসীবে না থাকে তাহলে আমার এবং আমার প্রিয়জন, আমার কলিজার টুকরা সন্তান, বিশ্বব্যাপী আমার ভক্ত অনুরক্তদের যত চোখের পানি ফেলানো হয়েছে তাদের সকলের প্রতিফোটা চোখের পানি অভিশাপের বহ্নিশিখা হয়ে আমার থেকে শত গুণ যন্ত্রনা ভোগের আগে, কষ্ট ভোগের আগে আল্লাহ তায়ালা যেনো তাদের মৃত্যু না দেন।
মিথ্যাবাদী ও জালিমদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ অযুত ধারায় বর্ষিত হোক। আর জাহান্নাম যেন হয় এদের চিরস্থায়ী ঠিকানা।
উৎস নিউজ মিডিয়া/৬ ডিসেম্বর ২০১২