একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আব্দুল আলীম ফুসফুসের ক্যান্সারজনিত কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
শনিবার দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে মারা যান তিনি। বিএসএমএমইউ চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল মুজিব ভুইয়া বাংলামেইলকে আলীমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে শনিবার বাদ মাগরিব বনানী মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাটে নিয়ে যাওয়া হবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার থেকে শারীরিক অসুস্থতার জন্য কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রিজন সেলে প্রাথমিকভাবে তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে হস্তান্তর করা হয়।
জেল সুপার ফরমান আলী বাংলামেইলকে বলেন, ‘আব্দুল আলীমের ডান ফুসফুসে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ায় জটিল আকার ধারণ করে। ফলে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের পরামর্শে গত মঙ্গলবার তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।’
উল্লেখ্য, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের কারণে ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ আব্দুল আলীমকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেন।
আলীমের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের মোট ১৭টি অভিযোগ আনা হয়েছিল। এর মধ্যে নয়টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। চারটি অভিযোগে তাকে মৃত্যু পর্যন্ত কারাদণ্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এসব অভিযোগের মধ্যে হত্যা, লুটতরাজ, দেশত্যাগে বাধ্য করা, অগ্নিসংযোগের মতো অপরাধ রয়েছে।
রায়ের সময় ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘আব্দুল আলীম যে অপরাধ করেছেন, তাতে তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পাওনা হয়। কিন্তু তার বয়স ও পঙ্গুত্বের কথা বিবেচনায় নিয়ে তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।’
৮৩ বছর বয়সী এই বিএনপি নেতা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলার সময় মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১১ সালের মার্চ মাসে জয়পুরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আব্দুল আলিমকে। তবে বয়স ও অসুস্থতার কারণে পরে তাকে জামিন দেয়া হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক/৩০ আগস্ট ২০১৪