সরকারি কর্তাব্যক্তিরা গডফাদারদের ঘরজামাই: আবুল মকসুদ

গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, জেলা-উপজেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্তাব্যক্তিরা মানুষের নিরাপত্তা বিধান না করে সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্য ও গডফাদারদের ঘরজামাই হয়ে আছেন। সন্ত্রাসীদের শায়েস্তা করা একদিনের ব্যাপার হলেও তাদের কিছুই করছেন না সরকারি কর্মকর্তারা। ফলে নারায়ণগঞ্জ, ফেনী ও মিরপুরের মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে।

মঙ্গলবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির গোলটেবিল মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে আদিবাসীদের ওপর হামলায় সরেজমিন পরিদর্শন শেষে ‘নাগরিক প্রতিনিধি দল’ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

গত ৯ মে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের খালিপপুর কাজিপাড়া গ্রামে আদিবাসীদের ওপর হামলা হয়। ওই ঘটনায় চারজন আদিবাসী আহত হন। তারা হলেন- মৃত চরণ টুডুর ছেলে সোনারাম টুডু (২৭), মঙ্গল সরেনের ছেলে বাবুল সরেন (২৫), সরদার সরেনের ছেলে সোম সরেন (৪৩) ও মৃত বারকা সরেনের ছেলে বাবুলাল সরেন (৪৮)।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন- জগন্নাথ বিশ্বাবিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাজিব মীর। তিনি জানান, খালিপপুর কাজীপাড়ার মৃত নূর ইসলামের ছেলে মাহাবুর রহমান ও হাফিজুর রহমানসহ ১০/১২ জন এ হামলার ঘটনা ঘটায়। তারা আহত চারজনকে বটগাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন করে।

১৪ মে নবাবগঞ্জ থানায় আটজনকে আসামি করে একটি এজাহার দায়ের করা হয়। এর দুই দিন পর এক নম্বর আসামিকে গ্রেফতার ও কোর্টে চালান করা হয়। কিন্তু দুই দিন পর জামিনে ছাড়া পান ওই ব্যক্তি। এতে ওই এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে আদিবাসীদের মধ্যে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই অঞ্চলে সম্পদ লুটে ভূমিগ্রাসীরা তৎপর। এর ফল হিসেবে আদিবাসীদের ওপর হামলা। কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। আদিবাসীদের সন্তানেরা আতঙ্কে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না।

সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য্য বলেন, “সারাদেশে দখলদার বাহিনীর হাতে ৯৯ ভাগ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। দেশে লুটেরাদের প্রশাসন ও ভূমিগ্রাসীদের রাজত্ব চলছে। দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলতে থাকলে সরকার থাকার প্রয়োজন নেই।”

গত ১১ ও ১২ জুন সরেজমিন পরিদর্শনে বাংলাদেশ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজীব মীর, কাপেং ফাউন্ডেশনের সদস্য দীপায়ন খীসা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের রেজোয়ানুল করিম, একাত্তর টিভির অন্তরা বিশ্বাস, ভোরের কাগজের তানভীর আহমেদ, মানবাধিকার কর্মী রিপন বানাই ও শাহীন শিরিন নাগরিক প্রতিনিধি দলের হয়ে ঘটনাস্থল যান।
উৎসঃ   নতুন বার্তা

Post a Comment

Previous Post Next Post