ইসলামী ডেস্ক : দিবস রজনীর বিবর্তনের মধ্য দিয়ে জীবন সায়াহ্নে এসে উপস্হিত হল পবিএ জিলহজ্ব মাস। যা আল্লাহপ্রেমে পাগল প্রতিটি মুমিনের হৃদয়েই শিহরন জাগায় মানব জীবনে নিয়ে আসে কুরবানীর আত্নাত্যাগের এক অনুপম অনুভুতি শত মুমিনের অবুঝ হৃদয় তাদের হৃদয় আর কিছুই মানে না। হয়ে পড়ে তারা অশান্ত। যেন তাদের সান্তনার একমাএ মাধ্যম হল রওজায়ে আত্বহার হৃদয় দর্পনে তাদের শত কল্পনা কবে জাবো ঐ সোনার মাদিনায়। প্রেমময়ের সাক্ষাতে হয়ে পড়ে তারা বিভোর। তাইতো মহান আল্লাহর বানীর বাস্তবতা ঘটাতে হুদয়ের তীব্র অস্হিরতা নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাইতুল্লাহর পাশে সমবেত হয় তারা।তাদের এই শুভ আগমনের জন্য আল্লাহ পাক তার বন্ধ ইবরাহীম খলিলুল্লাহ (আঃ)কে বাইতুল্লাহ প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইরশাদ হচ্ছে "স্বরন করুন, যখন আমি ইবরাহীমকে (আঃ) কে বাইতুল্লাহর স্হান ঠিক করে দিয়ে বলেছিলাম যে, আমার সাথে কাউকে শরিক করবেন না এবং আমার গৃহকে পবিত্র রাখুন তাওয়াফকারীদের জন্য। (সুরাহ হজ্জ- ২৭)। ইবরাহীম (আঃ)এর প্রতি আল্লাহর এই নির্দেশের কারন ছিল, ইসলামের পৃর্ব যুগে জুরহাম ও আমালেকা গোত্রের লোকেরা এখানে মুর্তি স্হাপন করে রেখেছিল। তারা এগুলোর পুজা করত। বিভিন্ন বর্ননায় পাওয়া যায় যে, হযরত ইকরাহীম (আঃ) বাইতুল্লাহ শরীফ নির্মানের পুর্বে এখানে বসবাস করতেন না, বরং তখন তিনি সিরিয়াতে বসবাস করতেন।পরবতীতে আল্লাহর মর্জি অনুযায়ী হিজরত করে তিনি এখানে আসেন। তখন আল্লাহ পাক তাঁকে বাইতুল্লাহ শরীফ নির্মানের নির্দেশনা দেন এবং এর পুনঃনির্মানের মহান দায়িত্বভার তাঁর উপরে ন্যস্ত করেন। হযরত ইবরাহীম (আঃ) তা সম্পন্ন করেন এবং এক পর্যায়ে আল্লাহ পাকের অশেষ মেহেরবানীতে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ এলো"হে ইবরাহীম! আপনি মানুষের মধ্যে হজ্জ্বের ঘোষনা প্রচার করেন। তারা বাইতুল্লাহর পানে ছুটে আসবে পায়ে হেটে এবং সর্বপ্রকার কৃশকায় উটের পিটে সওয়ার হয়ে দুর দুরান্ত থেকে। যাতে তারা তাদের কল্যানের স্হান পর্যন্ত পৌঁছে এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম স্বরণ করে তার দেয়া চর্তুষ্পদ জন্তু জবাই করার সময়। আল কোরআন, মুফাসসিরীনে কিরাম লিখেছেন যে, হযরত ইবরাহীম (আঃ) এর ওপর উক্ত নির্দেশ আসার পর তিনি মহান আল্লাহর দরবারে আরজ করলেন, হে পরওয়ারদেগার! কী করে আমি মানুষের নিকট আমার আওয়াজ পৌছাব..? আমার আওয়াজ তো তাদের পর্যন্ত যেয়ে পৌছাবে না। উত্তরে মহান আল্লাহ তা'আলা বললেন,হে ইবরাহীম (আঃ) আপনি ঘোষনা করুন। তা মানুষের কর্নে পৌছাবার দায়িত্ব আমি আল্লাহ গ্রহন করে নিলাম।ইবরাহীম (আঃ) যে স্হানটিতে দাঁড়িয়ে উক্ত ঘোষনা প্রদান করেছিলেন, তা নিয়ে মত নৈক্য রয়েছে। কারো মতে, তিনি হজরে আসওয়াদের উপর দাঁড়িয়েছিলেন, আবার কেউ বলেন তিনি জাবালে আবি কুবাইছ এর উপর দাঁড়িয়েছিলে। তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে বিশ্ববাসীকে আহবান করে বলেন-হে লোক সকল! আপনাদের প্রতিপালক আপনাদের জন্য তার একটি গৃহ নির্মান করেছেন এবং আপনাদের ওপর তার হজ্ব পালন করাকে ফরজ করেছেন। সুতরাং আপনারা তার হজ্ব পালন করুন।বনিত আছে যে, হযরত ইবরাহীম (আঃ) এর এ ঘোষনাটিকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে পৌছিয়ে দিয়েছিলেন এবং তার এই মহান ঘোষনাটি জীবিত মানুষ তো শুনেছেই। এমনকি যারা মাতৃগর্ভে রয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত যারা আসবে, তারা এবং কিয়ামত পর্যন্ত যাদের ভাগ্যে আল্লাহ পাক হজ্ব পালন করার সৌভাগ্য লিখে দিয়েছেন।তারা সকলেই শুনেছেন। লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক ইন্নাল হামদা ওয়ান নিয়ামাতাকা লাকা ওয়াল মুলুকু লা শারিকালাক,,,,বলে তার ডাকে সাড়া দিয়েছেন। এই মহাবানীর উচ্চারনে মুখরিত হতে আজ আমাদের সম্মুখে মহান আল্লাহর সেই বিধান পবিত্র হজ্ব সমাগত। মক্কায় পৌঁছতে সামর্থবানদের ওপর এ হজ্ব আদায় করা ফরজ ও কর্তব্য তাই আমাদের যাদের সামর্থ রয়েছে তাদের উপর জীবনে একবার হজ্ব করা ফরজ করা হয়েছে । আসুন আমরা নিয়ত করি সোনার মাদিনা যাওয়ার জন্য।কারন রাসুল কারীম (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর ঘর পর্যন্ত পৌঁছাবার উপযুক্ত ধন ও সাওয়ারীর মালিক হইয়া হজ্ব করিল না, সে ইহদীর মত মরুক আর নাছারার মত মরুক তাহাতে আল্লাহর কিছু আসে যায় না। তিরমিজী।তিনি আর বলেন আমার মৃত্যুর পর যে ব্যক্তি হজ্ব করিয়া আমার কবর জিয়ারাত করিল সে যেন জিন্দা অবস্হায় আমারই সহিত মোলাকাত করিল।বায়হাকী। তাই আসুন আমরা পরিপূন্য নিয়ত করি হজ্বের মাধ্যমে রাসুল কারীম (সাঃ) দিদার লাভ করি।
লেখক -
হাফেজ মাওঃ জসিম উদ্দীন চাঁদপুরী সদস্য বাংলাদেশ জাতীর মুফাস্সির পরিষদ ও ইসলামিক মিডিয়া সোসাইটি, খতীব ভুবনঘর আল মাদিনা জামে মাসজিদ কুমিল্লা।