আমার নিরীহ সন্তান ওসমান গণিকে গুলি করে বুকে চেপে বসে মৃদাবী নিশ্চিত হলে স্থান ত্যাগ করে সীতাকুণ্ড থানার এএসআই ইকবাল। সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই অভিযোগ করেছেন পুলিশের গুলিতে নিহত ওসমানের বাবা আবুল কাশেম। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
আবুল কাশেম অভিযোগ করেন, চলতি বছরের শুরুতে ওসমান বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে প্রায় নয় মাস পর জামিনে ছাড়া পায়। এরপর সে পরিবারের বাজার সদায় থেকে শুরু করে সকল সামাজিক কাজে সম্পৃক্ত ছিল। এমনকি প্রতিদিন সকাল-বিকাল কেনাকাটার উদ্দেশ্যে সীতাকু- থানার পাশে অবস্থিত কাঁচা বাজারে যাতায়াত করত। পুলিশ চাইলে আমার সন্তানকে সেখান থেকেও গ্রেফতার করতে পারত।
অথচ শুধুমাত্র পরিকল্পিত হত্যার উদ্দেশ্যে এএসআই ইকবালের নেতৃত্বে অপর ৪ পুলিশ সদস্য দিনে দুপুরে আমার সন্তানকে ভাতের প্লেট থেকে তুলে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে ঠান্ডা মাথায় কোমরে গুলি করে। এরপর এএসআই ইকবাল ওসমানের বুকে চেপে বসে মৃত্যু নিশ্চিত করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
এসময় নিহতের পিতা ‘আসামী ছিনতাইয়ের সময় অজান্তে কনস্টেবলের বন্দুকের গুলি বেরিয়ে ওসমান নিহত হয়েছে’ পুলিশের এমন বক্তব্যকে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবী করেন। তিনি বলেন, সেদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী উপস্থিত এলাকাবাসী।
তিনি পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সন্তান হত্যার উপযুক্ত বিচার দাবী করেন।
এসময় উপস্থিত নিহতের ছোট ভাই আলী হায়দার বলেন, আমরা দু’ভাই একসাথে বসে দুপুরের ভাত খাচ্ছিলাম। ছোখের পলকেই ঘটে গেল হত্যাকান্ড। গুলি খাওয়ার পরও দ্রুত হাসপাতালে নিতে পারলে আমার ভাইকে বাঁচানো যেত। কিন্তু পুলিশ সে সুযোগ দিলোনা বলেই অঝোরে কেদেঁ দিলেন হায়দার। সাথে ডুকরে কেঁদে উঠলেন উপস্থিত নিহত পরিবারের মা-বাবা, ভাই-বোন সহ কোলের শিশুরাও। তাদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহত ওসমানের মাতা খুরশিদ জাহান, ভাই- ওমর ফারুক, বোন- বিবি মরিয়ম, সুফিয়া সুলতানা, জয়নাব, ফাতেমাতুজ্জোহরা, খাদিজা আক্তার, কুলসুম, ভাইয়ের স্ত্রী শিরীন আক্তার, বোনের মেয়ে শিলা প্রমূখ।
উল্লেখ্য, গত ১৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ৩টায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের হমতনগর গ্রামে পুলিশের গুলিতে মো. ওসমান গণি (২৮) নিহত হয়।