ফেনীতে আ.লীগ নেতার নেতৃত্বে মা-মেয়েকে গণধর্ষণ : ২ বছরেও বিচার পাননি ||

ঢাকা: স্বার্মীর মৃত্যুর গৃহবধূকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে সম্পত্তি আত্মসাত করেই ক্ষ্যান্ত হননি। পরে তার ছোট মেয়ের সামনেই বড় মেয়ে ও তাকে পুনরায় গণধর্ষণ করেছে দুর্বৃত্ত। এরপর এই ধর্ষণের দৃশ্য ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ মামলার বাদিকে থানায় আটকিয়ে ঘটনার প্রধান নায়ক কে স্বাক্ষী করে মামলা দায়ের করেছেন বলে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ফেনী জেলার দাগনভূঞায় ২০১৩ সালে এ ঘটনায় ধর্ষিত পরিবার আইনশৃংখলা বাহিনীসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যের দ্বারস্থ হয়েও কোন প্রকার প্রতিকার পায়নি। এমনকি মূল অভিযুক্ত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন মামুনকে মামলার আসামিও করা হয়নি। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে ধর্ষিতা গৃহবধূ ও পরিবার এ অভিযোগ করেন।

গৃহবধূ জানান, ২০১২ সালে তার স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার পর থেকেই উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান ও সরকার দলীয় নেতা জয়নাল আবেদিন মামুন তাকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করতে থাকেন। পরে তিনি তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে মামুন রাজি হননি। তিনি স্থানীয় জামাল উদ্দীনকে বিয়ে করলেও মামুনের হুমকিতে দুইমাস পর তাদের বিচ্ছেদ হয়।

এরপর ২০১৩ সালের ১১সেপ্টেম্বর তার বড় মেয়েকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় মামুনের লোকজন। পরে তাকে ফোন করে তার মেয়েকে আনতে মামুনের বাসায় যান। এসময় মামুন তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ছয়টি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে কয়েকটি দোকানসহ সম্পত্তি হাতিয়ে নেন। তবে পরবর্তীতে ভিডিওটি ফেসবুকের মাধ্যমে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়।

ধর্ষণের পর মামুনের ছোট ভাই লিটু তাকে নিয়ে একটি বাড়িতে যায়। সেখানে তার ১৩ বছরের ছোট মেয়ের সামনে তাকে ও তার বড় মেয়েকে ১৪ জনে গণধর্ষণ করে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে র‌্যাবের একটি টিম তাদের উদ্ধার করে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, এলাকায় ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকাবাসী বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করে। আমরা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ প্রথমে মামলা নেয়নি। পরে ফুলগাজি থানা পুলিশ মামলা নিলেও (মামলা নং ২৭/১৫) প্রধান অভিযুক্ত মামুনকে আসামির নাম থেকে বাদ দেওয়া হয়। এরপর পর্নোগ্রাফি এবং নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করি। ঘটনাটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং মহিলা আইনজীবী সমিতিকেও অবহিত করা হয়। মামলাটি বর্তমানে সিআইডি পুলিশ তদন্ত করছে। কিন্তু আসামি লিটুকে আটক করা হলেও মামুনকে এখনো আটক করা হয়নি। এ বিষয়ে পুলিশ কোনো সহযোগীতা না করায় আমরা জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে হুমকিতে আছি।

আরজুমান আক্তার আরো বলেন, পুলিশ বলছে মামুনকে আটক করলে তাদের চাকরি চলে যাবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য নিজাম হাজারীকে জানালে তিনি বলেন, তাকে আমি দল করতে বলেছি, নির্যাতন করতে বলিনি।

তিনি আরো বলেন, মামুন আমার কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদাও আদায় করেছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী যেখানে নারী, সেখানে মার সামনে মেয়েকে, মেয়ের সামনে মাকে নির্যাতন করা হয়। আর আমরা বিচার পাই না। আমি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই।

www.facebook.com/voiceofsenbag

Post a Comment

Previous Post Next Post