বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার বলেছেন, পুলিশ ও প্রশাসনের সহায়তায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একের পর তান্ডব চালাচ্ছে ছাত্রলীগ। মূলত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের কাছে ছাত্র-শিক্ষকদেরজানমাল জিম্মি হয়ে পড়েছে।
তিনি আজ স্থানীয় এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির ঢাকা জেলা উত্তরের থানা দায়িত্বশীল শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শাখা সভাপতি ফজল আহমদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি হাবিবুর রহমানের পরিচালনায় শিক্ষাশিবিরে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোঃ ইয়াসিন আরাফাত।
শিবির সভাপতি বলেন, নিজেদের অপরাধ আড়াল এবং ছাত্রদের নির্যাতন করে ভবিষ্যৎ ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লেগেছে ছাত্রলীগ। ক্যাম্পাসে নিজেদের ও প্রতিপক্ষ সংগঠনের নেতাকর্মীদের খুন, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, অস্ত্রবাজীকে তারা নিত্য দিনের ঘটনায় পরিণত করেছে। এই সন্ত্রাসীরা নিরাপরাধ ছাত্রদের নির্যাতন করে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছে। ছাত্রদের মালামাল লুটপাট করছে। আর প্রতিবারই ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের ইচ্ছামত পুলিশ ও কতিপয় শিক্ষক নিরাপরাধ ছাত্রদরে গ্রেপ্তার ও বহিঃস্কার করে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। অন্য দিকে সম্মানিত শিক্ষকরাও এই অসভ্যদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেনা। সম্প্রতি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ন্যাক্কারজনক নজির সৃষ্টি করে নিজেদের অসভ্যতার ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ছাত্রলীগ। এবারই নতুন নয়। গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬৫ জন শিক্ষককে লাঞ্চিত করেছে তারা। সকল শ্রেণী পেশার মানুষই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের শিকার হয়ে চলেছে। ফলে ছাত্রলীগ দেশে এখন এক ধিকৃত ও সন্ত্রাসী সংগঠনের নাম।
তিনি আরো বলেন, ছাত্র নামে কলঙ্কদের কাছে লক্ষ লক্ষ ছাত্র-শিক্ষকের জীবন জিম্মি হয়ে পড়লেও প্রশাসন নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে। উল্টো পুলিশ এই সন্ত্রাসীদের সেবাদাসের ভূমিকা পালন করছে। জাতির জন্য আরও লজ্জার বিষয় হলো কতিপয় শিক্ষকও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসকে মদদ দিচ্ছে যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। আমরা সরকারকে বলব, আপনারা ক্ষমতার স্বার্থে ছাত্রলীগকে দানবে পরিণত করেছেন। এখন তাদের লাগাম টেনে ধরতে হবে আপনাদেরকেই। ছাত্র ও শিক্ষক সমাজ অনন্তকাল এই সন্ত্রাস মেনে নিতে প্রস্তুত নয়। জাতি আগামী প্রজন্ম গড়ার স্থান গুলোকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য দেখতে চায়না। অবিলম্বে ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। অন্যথায় ছাত্রসমাজের হাত দূর্বল নয়। ছাত্র-শিক্ষক ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিলে এর ফল শুভ হবেনা।
তিনি দায়িত্বশীলদের উদ্দেশ্যে বলেন, আদর্শহীনরা সন্ত্রাসের পথে চলবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা মহান আদর্শকে গ্রহণ করেছি। তাই ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ রক্ষায় আমাদেরও দায়িত্ব আছে। সন্ত্রাসকে আদর্শ দিয়ে মোকাবেলা করতে হবে। যে কোন পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ ধৈর্য্যে ও সাহসীকতার পরিচয় দিতে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি