সেনবাগে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি : জামায়াতের ত্রাণ বিতরন ||

সেনবাগ (নোয়াখালী) : টানা ভারী বর্ষণে ছোট ফেনী নদীর প্রাবল স্রোতে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় গতকাল বৃহস্পতিবারও আরও বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর এলাকাসহ প্রায় ১১১টি গ্রামে বন্যার পানি বেড়ে গেছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, স্কুল-মাদ্রাসা পানিতে ডুবে গেছে উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। ভেসে গেছে শত শত মৎস্য খামার। বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী না পাওয়ায় অনেক মানবেতর জীবনযাপন করছে।

প্রত্যেকের ঘরে সংগ্রহে রাখা ধান ও চাল পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এ সব এলাকার কারো ঘরের চুলোয় আগুন জলেনি। গৃহপালিত গরু-ছাগল হাঁস-মুরগি নিয়েও বিপাকে পড়েছে মানুষ। এলাকাবাসী ভেলা ও নৌকায় করে যাতায়াত করছে। উপজেলার সাথে যোগাযোগের শাখা সড়কগুলো ডুবে যাওয়ায় মানুষের দাঁড়ানোরও জায়গা নেই। এক অবর্ণনীয় অবস্থা বিরাজ করছে সর্বত্র।

এ ছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। অবিরাম বৃষ্টিতে হাজার হাজার একর জমির সবজি গাছ নষ্ট হওয়ায় চাষিরা পড়েছেন বিপাকে। সবজির বাগান নষ্ট হওয়ায় ইতোমধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রয়া শুরু হয়েছে। সবজি চাষিদের দাবি মাত্র কয়েক দিনের বৃষ্টিমুক্ত পরিবেশ বিরাজ করলে সবজি রোপণ সম্ভব। জমির সবজিবাগান নষ্ট হওয়ায় মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন এলাকার হাজার হাজার চাষি। ভেসে গেছে শতাধিক মাছের ঘের। বীজ তলাগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা চরম হতাশার মধ্যে রয়েছে। বন্যাআক্রান্ত এলাকাবাসী নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিস ৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে বন্যায় আক্রান্ত হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। আগামী ২ আগস্ট আনুষ্ঠিতব্য দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা ১০দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছে।

সেনবাগ উপজেলার ১নং ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বৃহস্পতিবার সেনবাগ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল মালেক সাহেবের নেতৃত্বে ত্রান নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতৃবৃন্দ।

জামায়াত শিবিরের নেতৃবৃন্দ দৈনিক সেনবাগে কণ্ঠ প্রতিনিধি কে জানান তাদের এই ত্রান বিতরণের কাজ অব্যাহত থাকবে।

সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উদয়ন দেওয়ান জানান, ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভার জন্য জেলা প্রশাষকের কাছে ১শ’ মেট্রিক টন ত্রাণ সহায্য চাওয়া হয়েছে। আমরা সে খান থেকে মাত্র ৫ টন ও দশ হাজার টাকা বরাদ্ধ পেয়েছি।

দৈনিক সেনবাগে কণ্ঠ/ ৩১ জুলাই ২০১৫।

Post a Comment

Previous Post Next Post