বুলেটের শক্তির চেয়ে শহীদের রক্তের শক্তি অনেক বেশী : শিবির সেক্রেটারি ||

চলমান অান্দোলনে অাজ পর্যন্ত সারাদেশে ছাত্রশিবিরের নিরাপরাধ ৭ জন মেধাবী ছাত্র নেতাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে অাইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রতিনিয়ত: অাইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইনিয়ে বিনিয়ে মেধাবী ছাত্রকে হত্যার মিথ্যা বিবরণ মিডিয়ার মাধ্যমে জনগনকে জানাচ্ছে। অার এক শ্রেনীর দালাল মিডিয়া তা যাছাই বাছাই না করে গ্রোগ্রাসে গিলছে। যাকে হত্যা করা হলো অাসলে সে প্রকৃত অপরাধী কিনা তা অনুসন্ধানে প্রয়োজন কেউ মনে করেনা।জাতির বিবেক মিডিয়া অাজ অনেকাংশে বিবেকবোধ হারিয়ে শতভাগ মিথ্যা বিবরণকে অামলে নিয়ে জাতিকে ভুল সংবাদ পরিবেশন করে চলছে।

একের পর এক নেতাকর্মীকে হত্যা করে অবৈধ সরকার এবং অাইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসী বাহিনী অাসলে কি স্বার্থ হাসিল করতে চাচ্ছে ?

তারা কি অামাদের মনোবল ভেঙ্গে দিতে চাচ্ছে ? না অামাদের ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙ্গে দিয়ে প্রতিশোধ পরায়ণতার মানসিকতা তৈরি করে অামাদেরকে উগ্রতার দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে ? কিংবা তারা হয়তো ভেবেছে এভাবে হত্যাকান্ড চালাতে থাকলে এ কাফেলার জনশক্তিরা বাতিলের বিরুদ্ধে বর্জ হুংকারে গর্জে উঠতে ভয় পাবে ?এ যদি হয় তাদের উদ্দেশ্য তাহলে নিদ্বিধায় বলা যায় তাদের উদ্দেশ্য শতভাগ ব্যর্থ হবে।

কেননা ইসলামী ছাত্রশিবির লক্ষ্যহীন কোন কাফেলা নয়। এ কাফেলার প্রতিটি জনশক্তির কাছে অান্দোলনের লক্ষ্য অনেক পরিস্কার।তারা জেনে বুঝেই এ অান্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছে।তাইতো অান্দোলনের একজন সৈনিকের শাহাদাতে সে কখনো ভড়কে যায়না।বরং শহীদের ক্ষতবিক্ষত চেহারা দেখে সে তার অান্দোলনের ভূমিকার জায়গাটিকে অারো শানিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে থাকে। যদি হত্যা করে এ কাফেলাকে দমানো যেতো তাহলে এত ঝ্ঞ্চা বিক্ষুব্ধ পথ পাড়ি দিয়ে এ কাফেলা এ পর্যায়ে অাসার সুযোগ পেতোনা।

অামাদের কাফেলার অগ্রযাত্রার প্রতিটি পরতে পরতে রয়েছে অসংখ্য দ্বীনের মুজাহিদের ক্ষতবিক্ষত রক্ত মাখা শরীর।যে রক্তের শক্তি বাতিলের বুলটের শক্তির চেয়ে বহুগুন বেশী।তাইতো বাতিলের প্রতিটি বুলেট এ কাফেলাকে তার মঞ্জিলপানে নিয়ে যাবার জন্য সহযোগীর ভূমিকা পালন করে অাসছে। যে কাফেলার জনশক্তিরা রাত জেগে জেগে জায়নামাজে বসে চোখের পানি পেলে শহীদী মৃত্যুর জন্য তার প্রভুর দরবারে সর্বদা কাকুতি মিনতি করে সে কাফেলার সৈনিকদের শাহাদাতের রক্ততো কখনো বৃথা যাবার কথা নয়।অামরা বাংলার জমীন অাল্লাহর দ্বীনের জন্য যতটুকু অাবাদ করার সুযোগ পেয়েছি তা শহীদের রক্তের বদৌলতেই পেয়েছি।বাতিলের কাছ থেকে প্রতি ইঞ্চি জমিন অামাদের রক্ত দিয়ে কিনতে হয়েছে। অার এটিই তো অান্দোলনের সবচেয়ে বড় সফলতা।

তবুও শাহাদাতের কোন সংবাদ এ অান্দোলনের কর্মীরা সহজেই মেনে নিতে পারেনা। কারণ যে ভাইটিকে সে মনে প্রানে ভালো বাসতো তার ক্ষতবিক্ষত শরীর দেখে তার অাবেগ অাপ্লুত হয়ে যাওয়াটাই বাস্তবতা।যার কারণে শাহাদাতের সংবাদ শুনে দরজা বন্ধ করে সে হাউ মাউ করে কাঁদতে থাকে। মনে হয় তার পরিবারের প্রিয় কোন অাপনজনকে সে হারিয়েছে। অামাদের এই অাবেগ ও ভালোবাসার বন্ধন ইসলামী অান্দোলনেরই এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
কাজেই শহীদের ক্ষতবিক্ষত চেহারা দেখে অামাদেরকে অাজ অারো দ্বীপ্ত শপথে এগিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।শতশত শহীদের কফিন যেন অামাদেরকে অাবেগাপ্লুত করে কোন হটকারিতার দিকে ধাবিত না করে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অামরা নিশ্চয়ই অবগত অাছি অামাদের অাদর্শের কারণে দুনিয়ার মানুষের একটি বড় অংশ অামাদের ভাইদেরকে এভাবে নৃশংসভাবে হত্যার জন্য সহানুভূতি জানাতে অাসবেনা এতে অামাদের দু:খ পাবার কিছু নেই। দুনিয়ার অাদালতে অামরা যেমন এর কোন বিচার পাবোনা তেমনি কারো কাছে সহানূভুতি পাবার অাশাটাও অামাদের করা ঠিক নয়। অামাদের সকল পাওনা অামরা অাখেরাতে অামাদের মহান প্রভুর কাছ থেকে পুরোপুরি বুঝে নিব। যে মহান প্রভুর সান্নিধ্য অামাদের দুনিয়ার জীবনের সকল লাঞ্চনা গঞ্চনার মহান পুরস্কারে পরিনত হবে।
সুতরাং ইসলামী অান্দোলনের প্রতিটি কর্মী অাজ তার প্রিয় দ্বীনি ভাইয়ের ক্ষতবিক্ষত শরীর দেখে নতুন উদ্যমে দ্বীনের ঝান্ডাকে উচ্চকিত করার শপথে দ্বীপ্তমান হয়ে অাদর্শের এই কাফেলাকে নিয়ে যাবে তার সঠিক লক্ষ্য পানে এটিই অামাদের প্রত্যাশা। বাংলার এ জমীনে অাল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার মধ্য দিয়ে অামাদের শহীদের বদলা অামরা নিবো।সে পর্যন্ত অত্যদিক ধৈর্য্য, সাহসিকতা, দৃঢ়তা, পেরেশানী অার অাল্লাহর সাহায্যের উপর নির্ভরশীল হয়েই অামাদের এগিয়ে যেতে হবে।অামাদের সামগ্রিক প্রচেষ্টাই এ জমীনে বাতিলের ধবংস ডেকে অানবে অার উচ্চকিত হবে দ্বীনের মশাল ইনশাঅাল্লাহ।

দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।

Post a Comment

Previous Post Next Post