বিশ্বের ৪ ইসলামী ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা আসছে

পিস টিভির চার স্বনামধন্য উপস্থাপক ও আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে যাচ্ছে সরকার।
দেশের এক শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। এসব চিন্তাবিদরা পিস টিভি, ইসলামিক বিভিন্ন চ্যানেল এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গিয়ে ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য ও ব্যাখ্যা দিয়ে আলোচিত হয়েছেন।

তারা হলেন তাঞ্জানিয়ার নাগরিক আবদুর রহিম গ্রিন এবং সৌদি আরবের নাগরিক শেখ আসিম আল হাকিম, ড. শেখ তৌফিক চৌধুরী ও শেখ মুসলেহ খান। এদের মধ্যে আবদুর রহিম গ্রিন বর্তমানে যুক্তরাজ্যে, ড. শেখ তৌফিক চৌধুরী অস্ট্রেলিয়া এবং শেখ মুসলেহ খান কানাডার টরন্টোতে বসবাস করছেন। এসব চিন্তাবিদ সম্পর্কে গোয়েন্দা সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে মন্তব্য আকারে বলেছে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে আগামী দিনগুলোতে এ জাতীয় বিতর্কিত আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যক্তিত্বকে বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা জরুরি মর্মে প্রতীয়মান হয়।

বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, কয়েকজন বিতর্কিত আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যক্তিত্ব আগামী ডিসেম্বর ২০১৪ এবং জানুয়ারি ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ভ্রমণ করবেন। এসব ইসলামী ব্যক্তি ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে অপব্যাখ্যাসহ নিজস্ব যুক্তি ও আদর্শ বিভিন্ন দেশে প্রচার করার কাজে নিয়োজিত আছেন।

বাংলাদেশের কিছু সংগঠন/সামাজিক প্রতিষ্ঠান/ ক্লাবের পক্ষ থেকে এ সব ব্যক্তিদের বাংলাদেশ সফরে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব ব্যক্তিকে দিয়ে ওয়াজ মাহফিলসহ বিভিন্ন সভা, সেমিনার করে বাংলাদেশের ইসলামী দলগুলো সরকার বিরোধী মদত বা জিহাদি কার্যক্রমকে উদ্বুদ্ধ করার মতো নেতিবাচক ধারণা বা মতবাদ ছড়িয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে এ সকল কার্যক্রমে উসকে দিতে পারে। এ সব ব্যক্তির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি সংযুক্ত তালিকায় উপস্থাপন করা হয়েছে।

এর আগে গত ১৭ই জুন বিতর্কিত আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যক্তিত্ব ও পিস টিভির বক্তা কানাডিয়ান নাগরিক ড. আবু আমেনাহ বিলাল ব্রেডলি ফিলিপস বাংলাদেশে সেমিনারে অংশ নিতে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সমর্থিত প্রতিষ্ঠান সিয়ান একাডেমি কর্তৃক আমন্ত্রিত হয়ে সরকারের পূর্বানুমতি ছাড়া বাংলাদেশে আসেন। পরে ওই কর্মসূচি পালনে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা না থাকায় ১৮ই জুন মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে তাকে ঢাকা থেকে ফেরত পাঠানো হয়।

প্রতিবেদনে ইসলামী চিন্তাবিদদের পরিচয় যেভাবে দেয়া হয়েছে: গোয়েন্দা সংস্থাটি আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যক্তিত্বদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতিও তুলে ধরেছে। তাঞ্জানিয়ার নাগরিক আবদুর রহিম গ্রিন সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি পিস টিভি এবং ইসলামিক চ্যানেলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়ে থাকেন।

এছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তিনি ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্য প্রদান/ ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। শেখ আসিম আল হাকিম সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি ১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৭ সালে জেদ্দায় বাদশাহ আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ
পাস করেন। পরে উম আল কুইরা বিশ্ববিদ্যালয় মক্কা থেকে তিনি ইসলামী শিক্ষায় ডিপ্লোমা করেন। তিনি ইংরেজি ভাষায় ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে তর্জমা/ ব্যাখ্যা উপস্থাপন করে থাকেন।

তিনি ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তার হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিষয়ে দক্ষতা রয়েছে। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবের একটি পাথর কাটা এবং খনিজ কেন্দ্রে পরিচালক
হিসেবে কাজ করছেন। তিনি সৌদি টিভি ও বেতার চ্যানেলে ইসলামী প্রোগ্রামে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে থাকেন। ড. শেখ তৌফিক চৌধুরীর উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম সম্পর্কে বলা হয়েছে, সামাজিক সংগঠন মার্সি মিশন-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও বর্তমান সিইও।

মার্সি মিশন হলো মুসলিম বিশ্বের দ্রুত বিকাশমান সামাজিক সংগঠন।
তিনি মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শরিয়া কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন করেন। বহুজাতিক কোম্পানিতে সিইও এবং মেডিক্যাল
চিকিৎসক হিসেবে তিনি অস্ট্রেলিয়াতে কাজ করছেন। তিনি পৃথিবীর অনেক দেশ সফর করেছেন। ইসলামী আইন, শরিয়া ইত্যাদি বিষয়ে তিনি সারা বিশ্বে বিভিন্ন টিভি ও মিডিয়াতে বক্তব্য উপস্থাপন করে থাকেন। শেখ মুসলেহ খানের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম সম্পর্কে বলা হয়েছে, কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং এনালিস্ট হিসেবে পরিচিত। ইসলামী আইন নিয়ে তিনি মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা করেছেন। কোরান ও বুখারি হাদিস সম্পর্কে তিনি বিস্তর জ্ঞান রাখেন। তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন মসজিদে খুতবা এবং বিভিন্ন ইসলামী প্রতিষ্ঠানে ক্লাস নিয়ে থাকেন।

উৎস: মানবজমিন
৮ ডিসেম্বর ২০১৪/এমটিনিউজ২৪/এসএসুমন/এমএএম/আরএইস

Post a Comment

Previous Post Next Post