সন্তানের হাতে মার খেতে হয়, এর চেয়ে কষ্টের কী আছে!

নিজে না খেয়ে, ধার-দেনা করে সন্তানদের মানুষ করেছি। অথচ সেই সন্তানরা আমাকে মারধর করে। এর চেয়ে আর দুঃখ, কষ্ট ও লজ্জার কী আছে!

কথাগুলো বলতেই কণ্ঠস্বর থেমে যায় নরসিংদীর প্রবীণ নারী ফিরোজা বেগমের। দুই চোখ ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন তিনি।

মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রবীণদের পক্ষ থেকে কথা বলার সময়ে এভাবেই নিজের দুর্দশা তুলে ধরেন ফিরোজা বেগম।

ফোরাম ফর দ্যা রাইটস অব দ্যা এল্ডারলি বাংলাদেশ (এফআরবি) এর উদ্যোগে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।

ফিরোজা বেগম জানান, সন্তানদের কখনো বাবা-মা পর করতে পারে না। কিন্তু সন্তানরা বড় হলে কেন এমন হয়ে যায় তা তার জানা নেই। বাবা-মা বৃদ্ধ হলে তাদের আর মূল্য থাকে না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাসরিন বেগম বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে। প্রবীণদের জন্য যে নীতিমালা করা হয়েছে তার সঠিক
বাস্তবায়ন করতে হবে।

নাসরিন বেগম বলেন, প্রবীণরা শুধু পরিবার থেকেই অবহেলিত হচ্ছেন তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে একজন প্রবীণ হয়রানি ও অবহেলার শিকার হচ্ছেন। মোটকথা আগে আমাদের সবার মাঝে সচেতনতা দ্রুত বাড়াতে হবে।

তিনি আশাব্যক্ত করে বলেন, কোনো আইন বা জরিমানার ভয়ে নয়, সন্তানরা যেন বাবা-মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা নিয়ে দেখভাল করে সেই প্রত্যাশা করি।

বক্তারা বলেন, ইতোমধ্যে প্রবীণদের জন্য নীতিমালা ও বাবা-মায়ের ভরণ-পোষণের জন্য আইন করা হয়েছে। এ বিষয়ে সচতেনতা গড়ে তুলতে হবে। প্রবীণ ইস্যুটি কীভাবে সরকারের নজরে আসে সেই চেষ্টা করতে হবে সবাইকে। রাষ্ট্রীয়, পরিবার ও সমাজের এই তিনের দায়িত্ব রয়েছে প্রবীণদের দেখভালের। তবে প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে পরিবারের। শুরু করতে হবে পরিবার থেকেই। সন্তানদের সেই মূল্যবোধ দিয়ে গড়ে তুলতে হবে।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ডা. কে এম রশিদের সঞ্চালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. এম কবির, এক্সিকিউটিভ সভাপতি ফেরদৌস আরা বেগম প্রমুখ।

আয়োজকরা জানান, শতকরা ৪০ ভাগ প্রবীণ নারী শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এছাড়া পারিবারিক ও সামাজিকভাবেও প্রবীণরা বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হন।

উৎসঃ বাংলানিউজ২৪

Post a Comment

Previous Post Next Post