ছাত্রলীগ-যুবলীগ বেপরোয়া

গত ৩ জুন খুলনার এক মাছ ব্যবসায়ীর ১৭ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। পরদিন নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিএল কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান, দৌলতপুর এলাকার যুবলীগ নেতা কাজী ইব্রাহিম মার্শাল, ইবাদ মোড়লসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
রাজীব নূর ও হাসান হিমালয়, খুলনা থেকে

গত ৩ জুন খুলনার এক মাছ ব্যবসায়ীর ১৭ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। পরদিন নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিএল কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান, দৌলতপুর এলাকার যুবলীগ নেতা কাজী ইব্রাহিম মার্শাল, ইবাদ মোড়লসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ছিনতাই হওয়া ছয় লাখ ৩৮ টাকা। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা ছিনতাই করার কথা স্বীকার করেন। এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নগরীর ডেলটা ঘাট থেকে এক হাজার ৯০০ বতল ফেনসিডিলসহ একটি ট্রলার আটককরে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় যুবলীগে নবাগত জিরোপয়েন্ট এলাকার নেতা নাজমুল ইসলাম সরদারকে। গত ২৯ মে সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে চোরাই প্রাইভেটকার উদ্ধার করে পুলিশ। এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয় ছাত্রলীগ নেতা সৌমিত্র চক্রবর্তীকে। গাড়ি চুরির ওই মামলার আরেক আসামি মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি সবুজ হাজরা গতকাল বুধবার জামিনে বের হয়ে এসেছেন।ছাত্রলীগ-যুবলীগ বেপরোয়া

নগরীর আযম খান কমার্স কলেজ থেকে গোয়েন্দা পুলিশের অস্ত্র উদ্ধারের মামলার আসামিও এই সবুজ হাজরা। এ মামলায়ও তার জামিন হয়েছে। তবে অস্ত্র উদ্ধারের একই মামলায় কারাগারে আছেন মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মানিক। এ মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি দেবদুলাল বাড়ৈ বাপ্পী ও তার ছোট ভাই মহানগর ছাত্রলীগের অর্থ সম্পাদক সজল বাড়ৈ।শুধু হাবিব, নাজমুল, সৌমিত্র, সবুজ, মানিক, বাপ্পী ও সজল নন_ খুলনায় মাদক বা ছিনতাইয়ের বড় কোনো অপরাধের ঘটনা ঘটলেই উঠে আসে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের নাম। বিভিন্ন সময় মাদকসহ মহানগর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা গ্রেফতার হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ নেতাদের দ্বন্দ্বের কারণে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নানা দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে এসব অপকর্মে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মংলা) আসনের সাংসদ ও খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক এবং খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা-২ (সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা) আসনের সাংসদ মিজানুর রহমান মিজানের অনুসারী বিবদমান দুটি পক্ষের মধ্যে যুদ্ধংদেহী অবস্থা বিরাজ করছে। একই অবস্থা যুবলীগেও।

অস্ত্র উদ্ধার ও কিছু প্রশ্ন :মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত হওয়ার কয়েক দিন পর গত ৫ মার্চ কমার্স কলেজে সবুজ হাজরা নিয়ন্ত্রিত একটি কক্ষ থেকে বিদেশি পিস্তল ও ইয়াবা খাওয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। তবে সবুজ হাজরার প্রশ্রয়দাতা হিসেবে পরিচিত মইনুল আহমেদ সুজন এ ঘটনাকে প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন। খুলনাবাসীর কাছে জিলেট সুজন নামে পরিচিত ২২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এই নেতা সমকালকে বলেন, অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে রেড ক্রিসেন্টের রুম থেকে। এ রুমের দুটি চাবির একটি সুজনের প্রতিপক্ষ বলে পরিচিত রেড ক্রিসেন্টের উপদলনেতা ও মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হিরণ হাওলাদারের কাছে। তারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অস্ত্র রেখে অন্যদের ফাঁসানোর চেষ্টা করে থাকতে পারে বলে জিলেট সুজন মনে করেন।

হিরণ হাওলাদার সমকালকে বলেন, তিনি রেড ক্রিসেন্টের দায়িত্বে থাকলেও ওই কক্ষের চাবি কখনোই তার হাতে থাকত না। কলেজেও ঢুকতে শঙ্কিত বোধ করতেন তিনি। কক্ষটি সব সময়ই সবুজদের দখলে ছিল। মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি দেবদুলাল বাড়ৈ বাপ্পী আড়াল থেকে সবুজ ও সজলকে দিয়ে ওই কক্ষের কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতেন।দেবদুলাল বাড়ৈ বাপ্পী সমকালের কাছে দাবি করেন, অস্ত্র মামলাটি পুরোপুরি সাজানো। তিনি নাম উল্লেখ না করে খুলনায় নবনির্বাচিত একজন সাংসদের পক্ষে এসব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন। তবে ছাত্রলীগের আরেক নেতা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন সমকালের কাছে স্পষ্ট করে বলেছেন, খুলনা-২ আসনের সাংসদ মিজানুর রহমান মিজানের অনুসারীরা খুলনার রাজনীতির নীতিনির্ধারক কলেজগুলো দখল করার জন্য সংঘবদ্ধ প্রচারণা শুরু করেছে। মহানগর ছাত্রলীগের এ দুই নেতাই এ জন্য ছাত্রলীগের মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসেনুজ্জামান হোসেন, সহসভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান ডলার ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান রাসেলকে দায়ী করেন।

সাংসদ মিজানুর রহমান মিজান সমকালকে বলেন, 'ছাত্রলীগ ও যুবলীগে যেন কোনো সন্ত্রাসী আশ্রয় না পায়, এ ব্যাপারে সব সময়ই আমি সোচ্চার আছি। আমি নেতাদের বলে দিয়েছি, ছাত্রলীগ থেকে অছাত্রদের বিদায় করতে হবে। নগরীর কলেজগুলোকে যারা মাদকের আখড়া বানিয়েছে, ছাত্রলীগ তাদের ঠিকানা হতে পারে না।'তালুকদার আবদুল খালেক সমকালকে বলেন, পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সব সংস্থাকে বলা আছে, অপরাধ করে কেউ যেন সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে ছাড়া না পায়। যুবলীগ ও ছাত্রলীগের যাদের নামে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে এবং নেওয়া হবে। তবে তিনি একটি কলেজ ক্যাম্পাসে অস্ত্র পাওয়ার ঘটনায় মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতিকে অভিযুক্ত করার বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, 'আপনারা বিষয়টি খতিয়ে দেখেন?'

সংঘর্ষ, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ :অস্ত্র উদ্ধারের কয়েক দিন পর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কমার্স কলেজে ছাত্রলীগের দুই অংশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে নগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি সবুজ হাজরা ও কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী রিংকু ফরাজী গুরুতর আহত হন। রিংকু এখন পঙ্গুপ্রায়। ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, গত ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরের দিন ২২ ফেব্রুয়ারি কমার্স কলেজে দুই পক্ষে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনার পর মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি দেবদুলাল বাড়ৈ বাপ্পী ও সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহজালাল হোসেন সুজনের নামে মাদক বিক্রেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে খোদ ছাত্রলীগেরই আরেকটি পক্ষ। এ পক্ষের নেতা মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসেনুজ্জামান হোসেন সমকালকে বলেন, নগর ছাত্রলীগের সভাপতি বাপ্পী, সহসভাপতি সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক সুজন বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার বিনিময়ে নগরীর কলেজগুলোকে মাদক বেচাকেনার আখড়ায় পরিণত করেছেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আমরা জানিয়েছি যে নগরীর আযম খান কমার্স কলেজ, সুন্দরবন কলেজ ও সিটি কলেজের ভেতরে প্রকাশ্যেই ফেনসিডিল বিক্রি হয়। মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি সবুজ হাজরা কমার্স কলেজে, প্রচার সম্পাদক বদিউজ্জামান মনা সিটি কলেজে এবং সাদিকুর রহমান রিমন সুন্দরবন কলেজে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন। তাদের মদদ দেন বাপ্পী ও সুজন।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা এসব অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করেছেন। মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি দেবদুলাল বাড়ৈ বাপ্পী সমকালকে বলেন, 'হাবিব, মনাসহ এসব অপকর্মে জড়িতদের ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ছাত্রলীগে এখন কোনো মাদক বিক্রেতা নেই।' সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহজালাল হোসেন সুজনও সমকালের কাছে দাবি করেন, ছাত্রলীগে অপরাধীরা আর নেই। তিনি বলেন, 'আমি যদি প্রশ্রয়দাতা হতাম, তাহলে সবুজ ও মানিক এখন জেলে থাকত না।'

ছাত্রলীগের এ দুই নেতা পাল্টা মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসেনুজ্জামান হোসেন, সহসভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান ডলার ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান রাসেলকে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা অভিযোগ করে বলেন, সাংসদ মিজানুর রহমান মিজানের একান্ত সহকারীর দায়িত্ব পাওয়ার পর হোসেন ছাত্রলীগ থেকে পরিত্যক্ত দুই সন্ত্রাসী শেখ পলাশ ও সৈকত রোহানকে দিয়ে নগরীর পিটিআই মোড়ে ইয়াবা ও ফেনসিডিল বিক্রি করাচ্ছেন। তবে শেখ পলাশ সমকালের কাছে পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, 'আমি ও রোহান তাদের কাছ থেকে সরে গেছি বলেই এসব অভিযোগ করা হচ্ছে।'যুবলীগেও দুই পক্ষের সংঘাত :খুলনা মহানগরীর গল্লামারী, সোনাডাঙ্গা ট্রাক টার্মিনাল, জিরো পয়েন্টসহ আশপাশের এলাকায় যুবলীগের দুই নেতা মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এস এম হাফিজুর রহমান হাফিজ ও যুবলীগের নবাগত নেতা সরদার নাজমুল ইসলামের দ্বন্দ্ব এখন তুঙ্গে। ১৯৯৭ সালে বটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়া হাফিজের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলাসহ অনেক মামলা রয়েছে। ২০০৩-০৪ সালেও সন্ত্রাসী তালিকার শীর্ষে ছিল হাফিজের নাম। বর্তমানে তালুকদার আবদুল খালেকের আশীর্বাদে তিনি পুনর্বাসিত হয়েছেন রাজনীতিতে। বর্তমানে তাকে সভা-সমাবেশসহ সর্বত্রই তালুকদার খালেকের পাশে দেখা যায়।

হাফিজের বিরুদ্ধে সাংসদ মিজানুর রহমান মিজান দাঁড় করিয়েছেন নাজমুল ইসলাম সরদারকে। সর্বশেষ গত ২৬ এপ্রিল নগরীর ডাকবাংলো মোড়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সাংসদ মিজানুর রহমান মিজান যখন বক্তব্য রাখছিলেন, তখন সারাক্ষণই তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন নাজমুল। অথচ ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর বটিয়াঘাটা থানা ছাত্রদলের সভাপতি আসলাম শিকদারকে বোমা মেরে হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামি হওয়ার পর ২০১২ সালের শুরুতে নাজমুলের মুক্তি চেয়ে এলাকায় যে পোস্টার প্রচার করা হয়েছিল, তাতে শেখ হাসিনার সরকারকে বাকশালী আখ্যা দেওয়া হয় এবং নাজমুলকে তারেক রহমানের আস্থাভাজন বলে দাবি করা হয়। বর্তমানে তিনি এলাকায় যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত। প্রায়ই হাফিজ ও নাজমুলের দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। সর্বশেষ গত ৬ মে এ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সাংবাদিকরাও আহত হন।এ নিয়ে হাফিজ ও নাজমুলের বক্তব্য জানা যায়নি। তবে মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হাফেজ শামীম সমকালকে বলেন, হাফিজকে সংগঠন থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে; নাজমুল যুবলীগের কেউ নন। হাফিজ ও নাজমুল নিজেদের তালুকদার খালেক ও মিজানুর রহমান মিজানের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে যুবলীগ নেতা শামীম কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, 'তারা আমার নেতা, এ ব্যাপারে তাদেরকেই জিজ্ঞেস করুন।' যুবলীগ নেতা হাফিজ ও নাজমুল সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তালুকদার আবদুল খালেক ও মিজানুর রহমান মিজান প্রায় একই উত্তর দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, বড় দলে অনেক নেতাকর্মী থাকে। তাদের কেউ কেউ অপকর্মেও জড়ায়, কিন্তু ওই অপকর্মের দায় অন্যদের ওপর বর্তাবে কেন? এ বড় কঠিন প্রশ্ন। কে এর জবাব দেবেন।
উৎসঃ সমকাল

Post a Comment

Previous Post Next Post