আমি বাঁচতে চাই : মাত্র ১ টি করে টাকা দিলে সুস্থ্য হয়ে যাব

মামা আমি মরতে চাই না আমি আপনাদের মতো বেঁচে থাকতে চাই। আপনারা আমাকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করেন। বাংলাদেশের সবাই আমার জন্য একটি করে টাকা সাহায্য করলে মামা আমার বিশ্বাস সুস্থ্য হয়ে যাবো। মা-বাবা নয় ডা.শুভ মামা ও ডা.বাতেন মামাই আমার একমাত্র ভরসা। জীবননগর হাসপাতাল বেডে শুয়ে কিডনি রোগে আক্রান্ত মেধাবী হতদরিদ্র ছাত্র রাসেল এ ভাবেই হাসপাতালে আগতদের নিকট সরল উক্তি করতে থাকে।

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর পৌর এলাকার নারায়নপুর গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর লিয়াকত আলীর চার সন্তানের মধ্যে রাসেল(১৫) সবার বড়। রাসেল অত্যন্ত মেধাবী। দরিদ্র ঘরের সন্তান রাসেল পঞ্চম শ্রেনীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে এলাকাবাসীকে তাক লাগিয়েছিল। রাসেলকে দরিদ্র পিতা মাতার অনেক স্বপ্ন ছিল। রাসেলেরও ইচ্ছা ছিল সে অনেক বড় অফিসার হয়ে মা বাবার মুখে হাসি ফোটাবে। সে সমাজের আর দশটা ছেলের মতো-ই বন্ধুদের সাথে খেলাধূলা করতো। রাসেল ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়াশোনা করা কালে একদিন তাকে অস্বাভাবিক আচরণ করতে দেখতে পায় পরিবারের সদস্যরা। এক পর্যায়ে সময় যতই যায় সে ততই শারীরিক প্রতিবন্ধীতে পরিণত হতে থাকে। রাসেলের পিতা লিয়াকত আলী জানান,ছেলের এ অবস্থায় আমার যা কিছু ছিল তা বিক্রি করে এবং এলাকাবাসীর আর্থিক সহযোগীতায় চিকিৎসা কালে তার কিডনিতে মারাত্মক সমস্যা ধরা পড়ে। তারপর এলাকাবাসীর নিকট থেকে চেয়ে-চিন্তে(সহযোগীতা নিয়ে) ছেলেকে সুস্থ্য করার আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হয়নি। রাসেল বর্তমানে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্য্রের ডা.আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল শুভ ও ডা.আব্দুল বাতেন জোয়ার্দ্দারের সহযোগীতায় ভর্তি রয়েছে।

হাসপাতাল বেডে থাকা রাসেল পরিচিত কাউকে দেখলেই অত্যন্ত সরল সোজা ভাষায় বলতে থাকে মামা আমাকে বড় ডাক্তার দেখালে আমি ভাল হয়ে যাবো। আমি বেঁচে থাকতে চাই,আমি মরতে চাই না। সবাই যদি আমার চিকিৎসার জন্য একটি করে টাকা দেয় তা দিয়ে আমি চিকিৎসা হয়ে ভাল হয়ে আবারও পড়াশোনা করতে চাই। আমি বাবা-মায়ের কাছে শুনেছি ডাক্তার নাকি বলেছে আমার দু’টি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে আমি মরে যাবো। আমাকে বাঁচাতে অনেক টাকার দরকার এতো টাকা তারা কোথায় পাবে। গরীব বাবা মা আমার চিকিৎসা করতে করতে খিজে(বিরক্ত) গেছে। তারা আর আমাকে আগের মতো ভালবাসে না। তাই আমি ডা.শুভ ও ডা.বাতেন মামাদের সহযোগীতায় হাসপাতালেই থাকি। ওই দু’ডাক্তারকে নিয়ে রাসেল একটি ছড়াও তৈরী করেছে। যার দু’টি লাইন হচ্ছে-”ডাক্তার শুভ মামা বাতেন মামা ভাল ছেলে,তারা নিজেরা না খেয়ে আমাকে খাইয়ে ভাল করে তুলছে”। রাসেল জানায়,হাসপাতালই আমার জীবনের ঠিকানা। আল্লাহ আমাকে ডা.শুভ মামা ও ডা.বাতেন মামাদের দয়ায় বাঁচিয়ে রেখেছেন। তারা আমাকে মাঝে মধ্যে টাকা পয়সাও দেন। হাসপাতাল বেডে রাসেলের এমন আকুতি মিনতি শুনে অনেক মূমূর্ষ রোগী ও তাদের দেখতে আসা অনেকেই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। জীবননগর পৌরসভার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন জানান,রাসেল অসম্ভাবী মেধাবী ছিল। কিন্তু ছেলেটা রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে জীবন প্রদীপ নিভে যেতে বসেছে।

জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্য্রের আরএমও ডা.আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল শুভ জানান,রাসেল অত্যন্ত মেধাবী ও ভাল ছেলে। তার প্রবল মনোবল রয়েছে সে বেঁচে যাবে। সে দীর্ঘ দুই-তিন বছর ধরে ভূগছে। আমি নিজে এবং ডা.বাতেন ভাই তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। তবে আমার বিশ্বাস তার কিডনি এখনও ভাল আছে। তার দু’টি কিডনি নষ্ট হলে এতোদিন বেঁচে থাকার কথা নয়। তাকে ঢাকায় কিংবা অন্য কোথাও নিয়ে পরিক্ষা-নিরিক্ষা করানো হলে প্রকৃত সমস্যাটা কোথায় তা জানা যাবে। সে জন্য মোটা অংকের টাকার প্রয়োজন রয়েছে। যা তার পরিবারের দ্বারা কখনই সম্ভব হবে না। এ ব্যাপারে দেশ ও সমাজের ধনাঢ্য,বিত্তবানেরা এবং প্রবাসীরা এগিয়ে আসলে সকলেই সহযোগীতায় মেধাবী রাসেলের বেঁচে যাওয়ার সমূহ সম্ভবনা রয়েছে। রাসেলের চিকিৎসায় কোন হৃদয়বান ব্যাক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান সহযোগীতা করতে চাইলে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা  রাসেল,জীবননগর ইসলামী ব্যাংক শাখা কৃষি সঞ্চয়ী হিসাব নং-১৯৩৩ কিংবা মোবাইল নং-০১৭১১-৭০৮৩৮০ ও ০১৭১৮-৮৪৯১৮৬।

Post a Comment

Previous Post Next Post