নোয়াখালীর সুবর্নচর স্কুলছাত্রীর উপর চেয়ারম্যানের নির্যাতন ||

জেলা প্রতিনিধি :  
নোয়াখালী : নোয়াখালীর সুবর্নচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নে রাবেয়া বেগম (১৪) নামে এক স্কুল ছাত্রী ও তার পরিবারের লোকজনকে মধ্যযুগীয় কায়দায় এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেনের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার  বিকেলে চরবাটা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে গ্রাম্যশালিশে এ ঘটনা ঘটে।

রাবেয়া বেগম ওই ইউপির মধ্যচরবাটা গ্রামের ছায়েদুল হক এর বাড়ির দিন মজুর মো: হানিফ এর মেয়ে। সে চরবাটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী। অপর আহতরা হচ্ছেন রাবেয়ার বাবা মো: হানিফ (৫০), মা খতিজা খাতুন (৪০), খালা শামছুর নাহার (৩৫)।

আহত রাবেয়ার বাবা মো: হানিফ জানায়, গত কয়েক মাস ধরে একই বাড়ির হাসান এর পরিবারে সাথে তাদের পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে হাসান গ্রাম্য শালিশে তার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে চেয়ারম্যান পরিষদে তাদের পরিবারের সবাইকে উপস্থিত থাকতে বলে।

সোমবার রাতে শালিশি বৈঠকে উপস্থিত হওয়া মাত্র চেয়ারম্যান তাকে (হানিফ), তার স্ত্রী ও শালিকে এলোপাতাড়ি পিটাতে থাকে। পরে চেয়ারম্যান স্থানীয় চৌকিদার দিয়ে তার মেয়ে রাবেয়াকে বাড়ী থেকে তুলে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসে।

এরপর চেয়ারম্যান পরিষদে উপস্থিত গ্রামের শত শত লোকের সামনে রাবেয়াকেও এলোপাতাড়ি পিটাতে থাকে। এ সময় আঘাত সহ্য করতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে যায় রাবেয়া। চেয়ারম্যন তার লোকজন নিয়ে পরিষদ থেকে চলে গেলে হানিফ তার স্ত্রী, মেয়ে ও শালিকাকে উদ্ধার করে চরজব্বর উপজেলা হাসপাতালে এ ভর্তি করে।

এ ঘটনায় যাতে কোন মামলা না করার জন্য হুমকি দিচ্ছে চেয়ারম্যান।

রাবেয়ার মা খতিজা খাতুন বলেন, চেয়ারম্যান এর পায়ে ধরে চিৎকার করার পরও চেয়ারম্যান আমার ছোট মেয়েকে ছেড়ে দেয়নি। খতিজা এ ঘটনার সরকারের কাছে উপযুক্ত  বিচার  দাবী করেছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাবেয়া জানান, সে বার-বার চিৎকার করলেও উপস্থিত কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। পরে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। জ্ঞান ফিরলে দেখে সে হাসপাতালে ভর্তি।
 
রাবেয়া অভিযোগ করে বলেন, চেয়ারম্যান বিনা অপরাধে আমাকে গ্রামের শত-শত লোকের সামনে পিটিয়ে জখম করেছে। সে এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেছে।

চরবাটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: নিজাম উদ্দিন বলেন, “রাবেয়া তার বিদ্যালয়ের মানবিক শাখার ছাত্রী। তার ওপর চেয়ারম্যানের নির্যাতনের খবর তিনি শুনেছি।

এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, তার ইউনিয়ন পরিষদে কোন শালিশী বৈঠক হয়নি। আর তিনি হানিফকে ছিনেনও না।

চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি।

Post a Comment

Previous Post Next Post