হাজারো জনতাকে চোখের জলে ভাসিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত ডা. মোজাম্মেল ||

তিনি ছাত্রশিবিরের কুমিল্লা মহানগর সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি সম্প্রতি কুমিল্লা সেন্ট্রাল মেডিক্যাল থেকে কৃত্বিত্বের সাথে এমবিবিএস পাস করেন। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা কুমিল্লা শহরের ইবনে তাইমিয়ার সামনে প্রথম ও বাদ আসর নিজ এলাকা নাঙ্গলকোট উপজেলার মক্রবপুর হাইস্কুল মাঠে দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।

পাঠকের মতামত ও স্মৃতি প্রকাশ:
১. Abdul Quader Mridha
ঠিক ২০১২ সালের নভেম্বরে কুমিল্লা ভার্সিটির ভর্তি পরিক্ষায় পুলিশ বাহিনীর অতর্কিত হামলায় ২টি বুলেট এসে পড়েছিলো ডানছোয়ালে চোখের ঠিক ৩মিঃমিঃ নিচে।। হাড়গুলো ভেঙ্গে গিয়েছিলো।।। সাথে সাথে নিজ প্রচেষ্টায় একটি সি,এন,জি অটো-রিকশায় উঠে পড়লাম।। কুমিল্লা সিটি কলেজের সামনে আসতেই দেখা পেলাম প্রিয় সাইফুল ইসলাম ভাই।(মক্রবপুর কাজী বাড়ী ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র)….সাইফুল ভাইকে ডেকে সি,এন,জিতে উঠিয়ে চলে গেলাম হসপিটালে।।সেই হসপিটালে যাওয়ার পর থেকে শুরু করে প্রিয় মানুষটি(ডাঃ মোজাম্মেল হক) পাশে ছিলেন…এক্স-রে করানোর পরেই আমাকে বলতে ছিলেন আসরের নামাজ তো পড়তে পারেন নি।।।বেডে শুয়ে আসরের নামাজটি পড়ে নিন।।তার কথা মতে আসরের নামাজটি পড়ে নিলাম।।

এই নামাজের ডাককারী নিশ্চয় জান্নাতের সুসংবাদ পাবেন।। এর একটু পরেই আমার পাশে আসলো ছোট-ভাই ওসমান গনি মৃধা।। ডাক্তারের পরামর্শে দুই ভাই (ডাঃ মোজাম্মেল হক ও ওসমান গনি মৃধা আমাকে নিয়ে রওনা দিলেন ঢাকার উদ্দেশ্যে।।। এম্বুলেন্সটি টমছম ব্রিজ হয়ে কোটবাড়ি বিশ্বরোড দিয়ে ঢাকার দিকে চুটছিলো।। কোটবাড়ী বিশ্বরোড যাওয়াতেই মনে পড়ে গেলো প্রিয় আরেকটি মানুষের কথা।।। মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো আর বুজি দেখা হবেনা।।।।কারন অবস্থাটা এতোই আশংকাজনক ছিলো যে।। বাঁচা মরার যুদ্ধ চলছিলো।।। আমার মন খারাপ দেখে ওরা দুই ভাই খুবি মজা করতেছিলো ।। আমাকে মন খারাপ হতেই দিতো না।।। সবসময় সাহস দিতে আর দুষ্টামি করে বলতো হাড় একটা ভাঙ্গছে কি হয়েছে হাজার হাড় আমাদের কাছে আছে।।।

আহা সেই কথাগুলো কানে কেমন করে যে বাজতেছে।।।। কি হইলো এটা,কেমনে চলে গেলেন না পেরার দেশে।।।মোজাম্মেল ভাই কেনো মটর সাইকেল চালাতে গেলেন।।আপনি তো ভালো ড্রাইভ জানতেন না।।কেনো গেলেন।।কেনো????
পরবর্তীতে হসপিটালে যাওয়া,ডাক্তার দেখানো,হসপিটালের সিঙ্গেল কেবিন পাওয়া হতে শুরু করে পুরো চিকিৎসা শেষ করা পর্যন্ত মানুষটা আমার পাশে ছায়া হয়ে ছিলেন।।।।আজ ঠিকি তিনি চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে।।।।কত কিছুই না করে ছিলেন আমার জন্য।।।।আজ আমি ও আমরা কিছুই করতে পারলাম না।।।ক্ষমা করো আমাকে ও আমাদেরকে হে প্রশস্ত আত্বা।।।।।
ক্ষমা করো আমাদেরকে।।।
আমার মতো হাজারো মানুষের পাশে তিনি ছিলেন এক মহা মানব ও উপকারী হিসাবে।।।।
নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের হতাশ করবেন না।।।।
নিশ্চয়ই তিনি জান্নাতের সুসংবাদ পাবেন।।।।
আমরা তার আত্বাকে সর্বোচ্চ জান্নাত,জান্নাতুল ফেরদাউসে দেখতে চাই।।।।
।।।।।আল্লাহ তিনাকে জান্নাতবাসী করুক।।।।।।।।।।(আমিন)…..

২. শহিদুলল্ল্যাহ মিয়াজী
বৃদ্ধা মায়ের কান্নায় অাকাশ ভারি হয়ে উঠেছে।

৩.আজিম উল্লাহ হানিফ
কুমিল্লায় ডা. মোজাম্মেল হোসাইনের অকাল মৃত্যু
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কুমিল্লা মহানগর সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হোসাইন ৫ আগষ্ট বৃহস্পতিবার রাত ১০ টা ৩০ মিনিটে সড়ক দূর্ঘটনায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না…. রাজেউন। তার বয়স হয়েছিল ৩০ বছর। জানা গেছে, ডাক্তার মোজাম্মেল হোসাইন কুমিল্লার ক্যান্টনম্যান্ট থেকে শহরে আসার পথে মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় পতিত হন। পরে তাকে কুমিল্লা শহরের কুমিল্লা টাওয়ারে নেওয়া হয়,সেখানেই সকলকে কাদিয়ে এই জগত থেকে বিদায় নেন। ডাক্তার মোজাম্মেল হোসাইন কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার মক্রবপুর ইউনিয়নের তুলাগাও গ্রামের মরহুম মাস্টার মমতাজ উদ্দিন ও মাহবুবা খানমের ৭ম পুত্র। তিনি সিসিএন থেকে ডাক্তারি পাশ করেছেন। নিয়মিত লিখতেন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে কলাম। উল্লেখ্য যে ডাক্তার মোজাম্মেল ছিলেন নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপি নেতা ও মক্রবপুর ইউনিয়নের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম ছুপুর ছোট ভাই। তার প্রথম জানাযা ৬ আগষ্ট সকাল সাড়ে ১০ টায় টমছমব্রীজ ইবনে তাইমিয়া স্কুল এন্ড কলেজ রোডে অনুষ্ঠিত হয়। ২য় জানাযা আসরের নামাজের পর বেলা সাড়ে ৫ টায় নাঙ্গলকোটের মক্রবপুর হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। তার ২টি জানাযায় উপস্থিত ছিলেন তার ও পরিবারের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজন, রাজনৈতিক-সামাজিক নেতৃবৃন্দ, এলাকার বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তুলাগাও গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post