চট্রগ্রামে ছাত্রলীগের ‘টেন্ডারবাজ’ ৪০ নেতা কর্মী গ্রেপ্তার ||

চট্টগ্রাম : রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তরে (সিআরবি) কোটি কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই গ্রুপের দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর কৌশলী অবস্থান থেকে কঠোর অবস্থানে গেছে পুলিশ। গত সোমবার সিএমপির মাসিক অপরাধ বিষয়ক সভায় এ বিষয়ে পুলিশ কমিশনার নিজের মনোভাবের কথা জানিয়ে দেয়ার একদিন পর নগর গোয়েন্দা পুলিশ ও কোতোয়ালি থানা পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে পৃথকভাবে গ্রেপ্তার হয়েছে ছাত্রলীগের টেন্ডারবাজ ৪০ নেতাকর্মী।

মঙ্গলবার সিআরবি ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ৪০ জনের মধ্যে গোয়েন্দা পুলিশ ১২ জনকে আর কোতোয়ালি থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ২৮ জনকে। এদের মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারী সদ্য বহিস্কৃত নগর ছাত্রলীগের সদস্য জালাল উদ্দিন ওরফে ফক্স রানাও রয়েছে।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারি কমিশনার (উত্তর) কামরুজ্জামান বলেন, ‘সিআরবিতে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর পুলিশের দায়ের করা দুই মামলা এজাহারভূক্ত আসামিসহ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ১২ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতভর সিআরবি এলাকার বিভিন্ন বস্তি ও কলোনীতে এ অভিযান চালানো হয়।’

কোতোয়ালী থানার ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সিআবিতে সংঘর্ষের ঘটনায় এজাহার নামীয় সাত আসামিসহ মোট ২৮জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

গত ১ অক্টোবার দুপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় ওইদিন রাতে ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২৫০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন কোতোয়ালী থানার এস আই রুহুল আমীন। তারও আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বরের ঘটনায় ৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছিল পুলিশ। এসব মামলায় টেন্ডারবাজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নগর পুলিশের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সিএমপির মাসিক অপরাধ বিষয়ক সভায় কমিশনার স্যার সিআরবি ঘটনা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ভবিষ্যতে ওই এলাকায় টেন্ডার নিয়ে একসাথে ১০ জনেরও কোনো জমায়েত দেখতে চান না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িত সে যেই দলেরই হোকে তাকে গ্রেপ্তারে নির্দেশ দেন।’

২০১৩ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রকাশ্য রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে যুবলীগ কর্মী সাজু পালিত (২৮) ও আট বছরের শিশু আরমান নিহত হয়েছিল। এ ঘটনার পর বাবরকে যুবলীগ থেকে এবং লিমনকে ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল। এমনকি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে ফের সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন।

গত ১২ অক্টোবর দুপুরে সিআরবির সাত রাস্তার মোড়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে আবারও রক্তক্ষীয় সংঘাত ঘটে। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ তিনজন আহত হয়। এরপর পুলিশ বাবর ও লিমনকে বাদ দিয়ে একটি মামলা করলেও থামেনি তাদের আধিপত্যের লড়াই। এর ধারাবাহিকতায় হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর গ্রুপ এবং সাইফুল আলম লিমন গ্রুপ নগরীতে পাল্টাপাল্টি শোডাউনও করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১ অক্টোবর ফের সংঘর্ষে লিপ্ত হয় দুই গ্রুপ।

(সংবাদটি গুরুত্বপুর্ণ মনে হলে পেইসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)

Post a Comment

Previous Post Next Post