নামাজ পড়েই সময় পার করছেন জামায়াত নেতা মুজাহিদ ||

ঢাকা : নিয়মিত নামাজ আদায়ের মধ্যদিয়ে অধিকাংশ সময় পার করছেন একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ।

ফাঁসির প্রহর গণা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর তুলনায় তিনি অনেকখানি দৃঢ় আছেন বলে কারাগার অভ্যন্তরীর একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।

এদিকে পরিবারের সদস্যরা চলে যাওয়ার পর থেকে কনডেম সেলে বিষণ্ণ হয়ে পড়েছেন এক সময়ের বাকপটু ও তীর্যক মন্তব্যের জন্য বহুল আলোচিত-সমালোচিত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। তার খাদ্য গ্রহণের মাত্রাও কমে গেছে অনেক খানি।

সূত্রটি জানায়, শুক্রবার দুপুরে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদকে সাধারণ বন্দির মতোই সাদা ভাত, সব্জি, মাছ ও ডাল সরবরাহ করা হয় নির্ধারিত সময়ে। মুজাহিদ খাবার গ্রহণ করেছেন কি না তা জানা না গেলেও সাকা চৌধুরী অধিকাংশ খাবারই ফেরত দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ আদালতে তাদের রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর উভয়ের পরিবারের সদস্যরা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তাদের সাথে দেখা করেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মুজাহিদের সঙ্গে পরিবারের ১২ সদস্য দেখা করতে যায়। তারা হলেন- তার স্ত্রী তামান্না-ই-জাহান, বড় ভাই আলী আফজাল মোহাম্মদ খালেছ, ছোট ভাই ওজায়ের এম এ আকরাম, বড় ছেলে আলী আহম্মদ তাজদীদ, মেজ ছেলে আলী আহম্মদ তাহকিক, ছোট ছেলে আলী আহমেদ মাবরুর, মেয়ে তামরিনা বিনতে মুজাহিদ, বড় ছেলের স্ত্রী ফারজানা জেবিন, মেঝো ছেলের স্ত্রী নাসরিন কাকলি, ছোট ছেলের স্ত্রী সৈয়দা রুপাইদা, ভাগনে আ ন ম ফয়েজ হাদী সাব্বির ও স্বজন  নুরুল হুদা।

বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তার ছোট ছেলে আলী আহমেদ মাবরুর বলেন, ‘তিনি মানসিকভাবে দৃঢ় আছেন। সুস্থ আছেন। আমরা তার সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি আমাদের বলেছেন, ভয় করো না। ফাঁসি হলেও ইসলামের আন্দোলন চলবে।’ তবে তার দল সম্পর্কে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি বলে জানান তার ছেলে আহমেদ মাবরুর।

২০১৩ সালের ১৭ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মুজাহিদকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছিলেন। ওই রায় চ্যালেঞ্জ করে মুজাহিদের আইনজীবীরা সর্বোচ্চ আদালতে গেলে সর্বোচ্চ আদালতও ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখেন।

তবে প্রসিকিউশনের আনা সাতটি অভিযোগের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল তাকে তিনটিতে মৃত্যুদণ্ড দিলেও আপিল বিভাগ শুধুমাত্র ষষ্ঠ অভিযোগে অর্থাৎ বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখেন।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর দণ্ড থেকে বাঁচতে মুজাহিদের সামনে খোলা ছিল রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের পথ। তাও গতকাল বন্ধ হয়ে যায় আপিল বিভাগের রায়ে। এখন রাষ্ট্রপতির ক্ষমাই তার বাঁচার একমাত্র পথ। কিন্তু সেই বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি মুজাহিদ।

(সংবাদটি গুরুত্বপুর্ণ মনে হলে পেইসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)

Post a Comment

Previous Post Next Post