স্থানীয় নির্বাচনের মাঠ ছাড়বে না জামায়াত ||

নির্বাচনের মাঠ ছাড়বেন না জামায়াতে ইসলামী। যদিও দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়ায় সরাসরি অংশ নিতে পারবে না রাজনৈতিক অঙ্গনে কোণঠাসা জামায়াত। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়্যারম্যান এবং কাউন্সিলর/মেম্বার পদে কৌশলে তারা প্রার্থী দিয়ে স্থানীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাচনে অংশ নিতে কয়েক মাস আগে থেকেই সারা দেশে প্রার্থী বাছাইসহ পুরোদমে প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছে দলটি।

জামায়াত সূত্র জানায়, চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত সমথর্করা ভালো ফল করায় কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। ওই নির্বাচনে জামায়াত সমর্থিত ৩৬ উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ১৭৫ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবছর এপ্রিলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ২০ দলীয় জোট প্রার্থীদের বর্জন সত্ত্বেও জামায়াত সমর্থিত পাঁচ কাউন্সিলর প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। যদিও নির্বাচিত এসব জনপ্রতিনিধির অনেকেই রাজনৈতিক কারণে বহিষ্কার হয়েছেন অথবা কারাগারে আটক আছেন। এসব নির্বাচনের অভিজ্ঞতার আলোকে আসন্ন পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রতি বেশি আগ্রহ ও ভালো ফলের আশা জেগেছে জামায়াত নেতাদের।

সূত্র আরও জানায়, হাইকোর্টের একটি রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জামায়াতের দায়ের করা আপিল মামলা বিচারাধীন আছে। দলটিকে নিষিদ্ধ করা সংক্রান্ত মামলাও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দলের শীর্ষ নেতাদের বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। এসব প্রেক্ষাপটে দলের অস্তিত্ব নিয়ে বেশ চিন্তিত জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এ অবস্থায় দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচনের সিদ্ধান্তে দলটি আরও জটিলতার মধ্যে পড়ছে বলে অনেকের ধারণা।

জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বলেন, স্থানীয় সরকারের সব স্তরে দলীয় প্রতীক ও দলীয় মনোনয়নের ভিত্তিতে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দুরভিসন্ধিমূলক। এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যানের জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌর নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য জামায়াত প্রস্তুত। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ওপর। জোটের মনোভাব দেখেই জামায়াতের নির্বাচনী কৌশল চূড়ান্ত করা হবে। ওই নেতা আরও বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে না পারলে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যদি এতেও সরকার বা নির্বাচন কমিশন কোনো বাধার সৃষ্টি করে তাহলে স্থানীয়ভাবে জনসমর্থন রয়েছে, এমন নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের জামায়াতের পক্ষ থেকে সমর্থন দেয়া হবে। এটা সম্ভব না হলে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীদের সমর্থন দেবেন তারা।

(সংবাদটি গুরুত্বপুর্ণ মনে হলে পেইসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)

Post a Comment

Previous Post Next Post