পবিত্র কাবা শরীফের গিলাফ পাল্টানো হয়েছে। সৌদি আরবে বুধবার হজের দিন পবিত্র এ ঘরের গিলাফ পাল্টানো শুরু হয় ফজরের নামাজের পরপরই। পাল্টানোর কাজ শেষ করতে সময় লাগবে বিকেল পর্যন্ত। এ কাজে অংশ নিয়েছেন ৮৬ জন টেকনিশিয়ান।
প্রতি বছর হজের দিনই মহান আল্লাহর ঘরের গিলাফ পাল্টানো হয়। ৭শ’ কেজি খাঁটি সিল্ক ও ১শ’ ২০ কেজি স্বর্ণ ও রূপা দিয়ে নির্মিত গিলাফটি তৈরিতে প্রতি বছর খরচ হয় ২২ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল।
১৪ মিটার উঁচু ৪৭ মিটার লম্বা গিলাফের গায়ে ৯৫ সেন্টিমিটার চওড়া জায়গা নিয়ে স্বর্ণ ও রূপা দিয়ে লেখা রয়েছে কোরআনের আয়াতসমূহ। মক্কার উপকণ্ঠে একটি বিশেষ কারখানায় কাবা শরীফের গিলাফ তৈরি হয়।
পাল্টে ফেলা পুরোনো গিলাফ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও খ্যাতনামা ইসলামী ব্যক্তিদের উপহার হিসেবে দেয়া হয়।
আজ বুধবার পবিত্র হজ। বিশ্ব মুসলিম জাহানের সর্ববৃহত গণজমায়েত। লাখ লাখ মানুষের কন্ঠে লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ইন্নাল হামদা ধ্বনীতে মুখরিত মিনা থেকে আরাফাত। মিনা থেকে আরাফাত ১৪ কিলোমিটার পথ হাজিদের পদচারণায় প্রকম্পিত। সকলের পরিধানে একই পোশাক, উদ্দেশ্য একই, আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভ। আলাদা ভাষা, ভিন্ন রং, বিভিন্ন দেশ সব যেন এক হয়ে গেছে।
ফজরের নামাজ শেষে লাখো মুসলমানের ঢল নেমেছে ঐতিহাসিক আরাফাতের পথে। পায়ে হেঁটে অথবা গাড়িতে তারা পৌঁছাবেন আরাফাতে। সেখানে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন একই আজানে। মিনায় মসজিদে নামিরায় এ বছর আরাফাতের ঐতিহাসিক খুদবা প্রদান করবেন সৌদি আরবের গ্রান্ড মুফতি আবদুল আজিজ আল শেখ।
সৌদি গণমাধ্যমের মতে, প্রায় ২০ লাখ মুসলমান এ বছর আরাফাতের ময়দানে খুদবা শুনবেন। খুদবা শেষে আরাফাতে অবস্থান করে ইবাদত বন্দেগী ও দোয়ার মধ্য দিয়ে সময় কাটাবেন সন্ধ্যা পর্যন্ত। সূর্যাস্তের পরপরই যাত্রা করবেন মুজদালেফার উদ্দেশ্যে। খোলা আকাশের নীচে রাত্রিযাপন শেষে সকালে ফিরে আসবেন মিনায়।
জামারাকে প্রতীকি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ শেষে কোরবানী আদায় করে পুরুষেরা মাথা মুন্ডনের মাধ্যমে ইহরাম ত্যাগ করবেন। কোরবানি আদায়ের মাধ্যমে হজরত ইব্রাহীম (আঃ) এর ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করবেন হাজিরা।
সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল এ.কে.এম. শহিদুল করিম মিনা থেকে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের হাজিরা সবাই ভালো আছেন। তিনি জানান, চলতি বছর হজের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে আসা এক লাখ ৬ হাজার ৫শ’ ৫০জন বাংলাদেশী হজব্রত পালন করছেন।
বাংলাদেশী হাজিদের সেবায় সার্বক্ষণিক কাজ করছে হজ প্রশাসনিক দল, ইনফরমেশন বিভাগ, মেডিকেল টিম ও হজ ভলান্টিয়ার সহ দূতাবাস ও কনস্যুলেটের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা।
হাজিদের নিরাপত্তার জন্য মক্কা, মিনা, মুজদালেফা ঢেকে দেয়া হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে। হাজিদের জন্য বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি, জুস ও শুকনো খাবার বিতরণ করছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। হারিয়ে যাওয়া হাজিদের তাবু খুঁজে পেতে কাজ করছে কয়েক হাজার স্কাউট।
www.facebook.com/Voiceofsenbag