হঠাৎ একটা কালো আধার নেমে এসে দৃষ্টি ঝাপসা করে দিলে। যাত্রীদের পথ চলতেই হয়। কিন্তু আঁধারে তো সবাই সমান দেখে না। কতকগুলো জীব আছে আধার নেমে এলে তারা স্বাচ্ছান্দ্যে বিচরণ করতে পারে। তাদের জন্য আধার যতক্ষণ কালো রূপ ছড়িয়ে জেকে বসে থাকে ততক্ষণই বেশি মজা। ঝলমলে আলো তারা বরদাশত করতে পারে না। সূর্য যদি কোন কালো ভূত আড়াল করে তখন তাদের কী যে আনন্দ।
ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশনের বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সির জন্য বিভিন্ন রূপ, আলাদা রং এবং বিচিত্র ধর্ম নির্দারিত। এর মাঝে “ভিবাজিওর” বা “বেনী আসহকলা” ফ্রিকোয়েন্সি সমূহের আওতাভূক্ত রেডিয়েশন সমূহ মানুষ চুক্ষ অবলোকন করতে পারে, এর নিম্ন কিংবা উপরের উভয় জোনের রেডিয়েশন মানবচক্ষুর ধারণ কিংবা অবলোকন করতে পারে না। তাইতো মাটির নিচে পূতে রাখা বিস্ফোরক দ্রব্যের অবস্থান কুকুর শনাক্ত করতে পারলেও তার মনিব মানুষ তা দেখে সক্ষম নয়। এভাবেই অনেক ক্ষুদ্র প্রাণী প্রাকৃতিক পরিবেশের অনেক গোপনীয় তথ্য অবলোকন করতে সক্ষম হলেও মানুষ তা পারে না।
এক্স-রে যদি মানুষের চোখে এডাপটেবল হত তখন সে দুনিয়াজোড়া শুধু কংকাল দেখত, প্রাণীদের বর্তমান চেহারায় তাদের দেখা সম্ভব হতো না। দুনিয়ার বিরাজমান রেডিয়েশন সমূহের অনেকগুলোই মানুষ দেখে না। এহেন অবস্থায় আল্লাহর নূর অবলোকন করা দূনিয়ায় এ চোখে কি করে সম্ভব হতে পারে?
মহান আল্লাহ বাণী, আল কুরআনের নূর, মানুষের গ্রহণযোগ্য করে মানুষের ভাষায় রুপান্তরিত করে নাযিল করা হয়েছে। আরো সহজ করে মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য পাঠিয়েছেন নবী রাসূল।
কিন্তু তবুও কিছু অন্ধ মানুষ জন্ম নিচ্ছে। যাদের কথা আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন “আল্লাহ তাদের অন্তরে মহর মেরে দিয়েছে”। আর কিছু চক্ষু মান অন্ধদের পথ দেখানোর জন্য দায়িত্ব নিয়েছে আল-কুরআনের সৈনিকেরা। এই কাফেলার শুরু কারবালার প্রান্ত থেকে। অন্ধরা ইমাম হুসাইনের হত্যা করে এই কাফেলার পদ যাত্রাকে বন্ধ করতে দিতে চেয়েছিল, কিন্তু তারা পারে নি। আর কখনও পারবেও না। এরা আল্লাহর নাম বুকে, আল কুরআন হাতে নিয়ে সামনে এগিয়ে চলে। আর এই সিপাহ সালার নেতৃত্বে যারা থাকেন তাদেরকে হতে হয় “বেনী আসহকলা” ফ্রিকোয়েন্সি থেকেও অনেক অনেক বেশী চক্ষু দৃষ্টি সম্পন্ন। এরা মাটির গভীরে থাকা লুকানো বস্তু যেভাবে দেখতে পারেন ঠিক তেমনি মানুষের দিকে লক্ষ করে তার মেরুদন্ডের শক্তি বুঝতে পারে। আর এদের চক্ষু দৃষ্টি থাকতে এতটাই প্রখর যাতে তারা ঘনকালো অন্ধকারের মাঝেও পথ চলতে পারে।
আজ বাংলাদেশে ইসলামি আন্দোলনের উপর চলছে এক ঘন কালো অমানিশার আধার। আর এই সময় যারা আন্দোলনের দায়িত্ব স্ব-ইচ্ছায় কাধে তুলে নিচ্ছেন তারা নিশ্চয়ই অন্ধ বা বোকা নয়, তারা জেনে বুঝেই ঘন কালো আধারের মাঝে ঝাপ দিচ্ছেন। আল্লাহ এই ভাইদের দৃষ্টি শক্তি আরো নিখুত এবং প্রখর দিন, “আমিন”।
দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/২১ এপ্রিল ২০১৫।