পাশবিক শক্তির জোরে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার অপচেষ্টা না চালিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান।
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারী এক বিবৃতির মাধ্যমে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের শান্তিপ্রিয় জনগণ ২০ দলীয় জোটের নেতৃত্বে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সর্বাত্মক হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করে স্বৈরাচারী সরকারকে ঘৃণার সাথে প্রত্যাখ্যান করেছে।
দেশের জনগণ স্বৈরাচারী জালেম সরকারকে আর এক মুহূর্তেও ক্ষমতায় দেখতে চায় না। কিন্তু সরকার জনগণের মতামতের কোন তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ভর করে দেশের জনগণের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের স্ট্রীম রোলার চালিয়ে ক্ষমতায় থাকার ব্যর্থ প্রয়াস চালাচ্ছে।
ক্ষমতা লিপ্সু অবৈধ সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে এবং মানুষের ঘর-বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুট-তরাজ চালিয়ে তাদের জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।
সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে তাদের পেশাগত দক্ষতা ও নৈতিক মান বিধ্বস্ত করে দিয়েছে। তারা ঘুষ ও দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাগণ সরকারী দলের নেতাদের মত উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে সরকারী দলের সন্ত্রাসীদের আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার জন্য উস্কানি দিচ্ছেন।
গাজীপুর জেলার এসপি জনাব হারুন-অর-রশিদ গত ১৩ ফেব্রুয়ারী বিকেলে টঙ্গীতে আওয়ামী লীগ, যুব লীগ ও ছাত্রলীগের এক সমাবেশে ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে ‘তাদের হাতে নাতে ধরতে পারলে পিটিয়ে মেরে ফেলবেন।’
মর্মে বক্তব্য দিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের আইন নিজেদের হাতে তুলে নেয়ার জন্য প্ররোচনা দিয়েছেন। এ বক্তব্য দিয়ে তিনি দেশের আইন, সংবিধান ও আদালতের প্রতি অবজ্ঞা এবং অনাস্থাই প্রকাশ করেছেন। তিনি এ বক্তব্য দিয়ে আইন লঙ্ঘন করেছেন।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরাসরি মানুষের ঘর-বাড়ি ভাংচুর ও লুণ্ঠন করছে। পুলিশ জামায়াত নেতা বেলায়েত হোসেন মজুমদার ও ছাত্রশিবির নেতা বেলাল হোসাইনকে গ্রেফতার করে পায়ে গুলি চালায়।
তাদের ২ জনের ১টি করে পা কেটে ফেলতে হয়েছে। আজও কুমিল্লায় সাধারণ জনগণের ৫টি বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে। আমি এই নৃশংসতা এবং অমানবিকতার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আজ মুন্সীগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক এবিএম ফজলুল করিম, নারায়ণগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর জনাব মুমিনুল হক, মুন্সীগঞ্জ জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জনাব আবদুল মালেক ও জনাব আবদুল কুদ্দুসসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে।
এছাড়াও পাবনা জেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারী মাওলানা আবদুর রউফ, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি কারারুদ্ধ জনাব দেলোয়ার হোসেনের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা জনাব আলমগীর হোসাইন, পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর জনাব আবদুল হালিমসহ সারাদেশে জামায়াত ও ২০ দলীয় জোটের প্রায় ২ শতাধিক নেতা-কর্মীকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত সকল নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি প্রদান করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
সরকারের জুলুম-নির্যাতন-নিপীড়ন ধৈর্য ও সাহসের সাথে মোকাবেলা করে ২০ দলীয় জোট ঘোষিত সকল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করার জন্য আমি দেশের সংগ্রামী জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।