পিতার ইন্তেকালে আল্লামা সাঈদী :
সেদিন ছিল ১৯৮৬ সনের ৬ই ফেব্রুয়ারি ৷ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ৷ রাজধানী ঢাকার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্র শিবির এক সেমিনারের আয়োজন করে ৷ আল্লামা সাঈদী সেই সেমিনারের প্রধান অতিথি। এই সময় তাঁর কাছে পৌঁছে ভয়াবহ শোকের সংবাদ- তাঁর প্রিয় জনক আর নেই ৷
স্নেহদাতা পিতার ইন্তেকালের মুহুর্তে তিনি তাঁর পাশে থাকতে পারেন নি ৷ তাঁর পিতার ইন্তেকাল পূর্ব অবস্থার কথা তাঁর স্নেহময়ী মাতা এভাবে বর্ণনা করেছেনে, আমার সন্তানের পিতা প্রবল জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন ৷ কখনো কখনো জ্ঞানহারা হয়ে যেতেন ৷ জ্ঞান ফিরে আসতেই দেলওয়ার এসেছে কিনা জানতে চাইতেন ৷ ইন্তেকালের পূর্বে মুমিনের মৃত্যুর সকল চিহ্ন তাঁর চেহারায় ফুটে উঠলো ৷ আমি লক্ষ্য করলাম, দেলওয়ার বাইর থেকে বাড়িতে এলে ওকে দেখে তাঁর মুখে যেমন স্নিগ্ধ হাসি ফুটে উঠতো, ইন্তেকালের পূর্ব মুহুর্তেও তাঁর মুখে ঠিক সেই হাসিই ফুটে উঠলো এবং তিনি এমন ভাবে তাকালেন যে, মনে হচ্ছে যেন তিনি দেলওয়ারকে দেখছেন ৷ এরপর তিনি শূন্যে হাত বাড়িয়ে দিলেন ৷ মনে হলো যেন তিনি দেলওয়ারের হাত যেভাবে ধরতেন, ঠিক সেভাবেই কিছু একটা ধরলেন এবং বুকের ওপর রাখলেন ৷ আমি তাকিয়ে রয়েছি তার মুখের দিকে, তিনি হাসছেন ৷ এ অবস্থায় তিনি চোখ বন্ধ করলেন ৷ আমি দেখলাম তার কপাল ঘেমে গেলো ৷ তারপর অনুভব করলাম, দেলওয়ারের আব্বা আর নেই ৷
আল্লামা সাঈদী বলেন, সংবাদ পেয়ে আমি যখন পিরোজপুর বাড়িতে পৌঁছে আব্বাকে দেখলাম, তখন আমার কাছে মনে হলো আমি যেন জীবিত ঘুমন্ত আব্বাকে দেখছি ৷ মুখে ফুটে রয়েছে মধুর হাসি ৷ আব্বার শরীরে হাত দিয়ে দেখলাম, তখনও তাঁর শরীরে জীবিত মানুষের মতই উষ্ণ রয়েছে এবং কবরে নামানো পর্যন্ত তাঁর শরীর উষ্ণই ছিল ৷
আল্লাহ তাঁর পিতা মাতাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করুক। আমীন।
দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/৬ফেব্রুয়ারি ২০১৫।
চলবে→