হামলা হতে পারে তেলের ডিপো গুলোতে : চিন্তিত সরকার ||

নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা, খুলনার দৌলতপুর ও সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ির তেলের ডিপো গুলো নিয়ে চিন্তিত সরকার। এসব ডিপোর নিরাপত্তা বাড়াতে গত ২৮শে জানুয়ারি পুলিশের আইজিকে চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে নৌ- পথে জ্বালানি তেলের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ নৌ-রুটগুলোতে অতিরিক্ত টহলের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কোস্টগার্ডের ডিজিকে অনুরোধ করা হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, টানা অবরোধের কারণে বাংলাদেশ পেট্রলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) নারায়ণগঞ্জের ডিপো থেকে জ্বালানি তেল সরবরাহ আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। ফলে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোয় জ্বালানি তেল সঙ্কট দেখা দেয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। গত ১৩ই জানুয়ারি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়েছে, চলতি মওসুমে বোরো আবাদসহ সেচনির্ভর কৃষিকাজ অব্যাহত রাখতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বিপিসি পরিচালিত রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি তেল পরিবেশক কোম্পানি যমুনা ও মেঘনা এবং সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইলে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে পদ্মা ও মেঘনার চারটি তেলের ডিপো রয়েছে। এসব ডিপো থেকে প্রতিদিন পেট্রল, ডিজেল, অকটেনসহ গড়ে ৪০ লাখ লিটার জ্বালানি তেল দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। এছাড়া গোদনাইল পদ্মা ডিপো থেকে প্রতিদিন ১০ লাখ লিটার বিমানের জেড ফুয়েল ঢাকা বিমানবন্দরে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু টানা অবরোধের কারণে এসব তেল ডিপো থেকে গড়ে তিন থেকে চার লাখ লিটার তেল সরবরাহ কমে গেছে। এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর ডিপোগুলোর পাহারায় রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। তাদের তত্ত্বাবধানেই ডিপোর সামনে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শত শত ট্যাংকলরি। টানা অবরোধের কারণে জ্বালানি তেল নিয়ে রাস্তায় বের হতে চান না ট্যাঙ্কলরি মালিক ও শ্রমিকরা। তবে অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় বের হচ্ছেন। সড়ক পথে ঝুঁকি থাকায় নৌ-পথে জ্বালানি তেল পরিবহনের উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ডিপোগুলো সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে পাঁচ শতাধিক ট্যাঙ্কলরি জ্বালানি তেল সরবরাহের কাজে নিয়োজিত। নারায়ণগঞ্জ ডিপো থেকে ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, রংপুর, মুন্সীগঞ্জ, সাভার ও আশুলিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তেল সরবরাহ করে। কিন্তু টানা অবরোধের কারণে তাদের কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। আগে যেখানে একটি লরি দু-তিন ট্রিপ মাল সরবরাহ করত, সেখানে এখন সাতদিনে মাত্র দু-তিন ট্রিপ মাল সরবরাহ করছে। জ্বালানি তেল সরবরাহের পাশাপাশি তা পাচার রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিজিবি’র মহাপরিচালককে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, দেশের উত্তরাঞ্চলসহ সীমান্তবর্তী জেলা ও কক্সবাজার হয়ে মিয়ানমারে ডিজেল পাচার রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এদিকে পেট্রল বা ডিজেল দিয়ে জেনারেটর চালাতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। জেনারেটরের জ্বালানি কিনতে পেট্রল পাম্পগুলোতে যাওয়ার পর নানা প্রশ্নের মুখে পড়ছেন। বলা হচ্ছে, থানার ওসির কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আসুন। তাহলে ডিজেল দেয়া হবে। এনিয়ে বিরক্ত অনেক ব্যবসায়ী। তারা বলছেন, জেনারেটরের জ্বালানি কিনতে গেলেও এমন ঝামেলার মুখে পড়া ঠিক হচ্ছে না।

দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/ ০১ ফেব্রুয়ারী ২০১৫।

Post a Comment

Previous Post Next Post