কে এই বিজিবির ডিজি মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ ? ||

বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ হলেন বাংলাদেশের শীর্ষসন্ত্রাসী জোসেফ এর বড় ভাই । পলাতক শীর্ষসন্ত্রাসী জোসেফকে সরকার ধরিয়ে দেয়ার বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রেফতার করলেও মেজর জেনারেল আজিজ আওয়ামীলীগ সরকারের সাথে সর্বোচ্চ আনুগত্যের মুচলেকা দিয়ে জোসেফকে জামিন করায় এবং বিদেশে পাঠিয়ে দেয়।

বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবির সদর দফতরে এক সংবাদ বিফ্রিংয়ে বিজিবির ডিজি বিরোধীজোটের নেতাকর্মীদের গুলি করার সরাসরি নির্দেশ দেন। তারপর থেকে বিরোধীজোটসহ সর্বত্র নিন্দার ঝড় ওঠে। জনমনে প্রশ্ন ওঠে কে এই আজিজ? যিনি বিজিবির প্রধান হয়েও জনগণকে বিনা বিচারে গুলির নির্দেশ দিয়েছেন? যে বিজিবির নিস্ত্রিয়তায় একের পর এক সীমান্তে মানুষ খুন করছে ভারতের বিএসএফ। ডিজি আজিজের সময় বিজিবি একবারের জন্যও বিএসএফের অন্যায় হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে না পারলেও এবং মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা বিজিবির সদস্যদের ধরে নিয়ে গেলেও কার্যত কোন পদক্ষেপ নিতে না পারলেও হেফাজতসহ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে হত্যা ও নির্যাতনে পারদর্শিতা দেখাচ্ছে এ বাহিনী। যে বাহিনীর কাজ সীমান্ত রক্ষা করা তারা সেটা না করে দেশের মানুষকে হত্যায় নেমেছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেখে নেবার ঘোষণার পর বিজিবি প্রধানের গুলির নির্দেশ জনমনে প্রশ্ন তুলেছে।

নাগরিক সমাজ বলছেন, তাহলে কী শেখ হাসিনার নির্দেশেই বিজিবি প্রধান দেশটাকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন? এভাবে প্রতিটা প্রতিষ্ঠান আওয়ামীলীগের দাসত্ব মেনে চললে দেশ শিগগিরই ভয়ঙ্কর পরিণতির মুখোমুখি হবে।

বিজিবি প্রধান আজিজ শুধু তার ভাই শীর্ষসন্ত্রাসী জোসেফকে বিনাবিচারে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেনি পিলখানার ৫৭ সেনা অফিসার হত্যার নেপথ্যেও ছিলেন তিনি। এমনকি পিলখানার ঘটনার পর নিরপরাধ কিন্তু আওয়ামীলীগ মনা নয় এরকম বিডিআর সদস্যদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে এবং চাকরিচ্যুত করেছে। বিজিবি প্রধান হওয়ার শর্ত হিসেবে ও ভাইকে জামিনের শর্ত হিসেবে শেখ হাসিনা ও ভারতের দালালে পরিণত হয়েছে এই আজিজ- এরকমটিই বলছেন, জোরপূর্বক অবসরে পাঠানো সাবেক এক সেনা কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ের মতো সীমান্তে বিজিবির এতো অসহায় অবস্থা স্বাধীনতার আগে পরে কখনও ছিল না। বর্তমান ডিজি মূলত ভারতের প্রেসক্রিপশনে এই বাহিনী চালাচ্ছে। দেশ ও মানুষকে রক্ষার অতন্দ্র প্রহরীরা এখন মানুষকে গুলি করার নির্দেশ দেয়। এটাতো সন্ত্রাসীদের ভাষা। কোন অপরাধীকে বিনাবিচারে গুলির নির্দেশ মানবিকতা, আইন ও সভ্যতার মধ্যে পরে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমানকে গুলি করায় যেখানে ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র ও যৃক্তরাজ্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সেখানে বিজিবি প্রধানের সরাসরি গুলির নির্দেশ নিশ্চয় কোন শুভ বার্তা দিচ্ছে না আন্তর্জাতিক বিশ্বে। দেশের সবগুলো প্রতিষ্ঠান এখন আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠনের মতো ব্যবহার করছে। যেভাবে বাহিনীগুলোর প্রধানরা দলীয় আনুগত্য প্রদর্শন করছে তাতে শিগগিরই বাহিনীগুলোর মধ্যে অস্থিরতা ও বিদ্রোহ দেখা দিতে পারে এবং দেশে ভয়ঙ্কর গৃহযুদ্ধ বাধতে পারে।

বিজিবি প্রধানের বক্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। বিশিষ্ট আইনজীবী তাজৃল ইসলাম তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, সীমান্তে অসহায় ফেলানিদের রক্ষা করতে বন্দুক উচু করার মুরোদ নেই অথচ নিরস্ত্র- মুক্তিকামী মানুষ কে হত্যা করতে তার (আজিজের) কত খায়েশ ! ! এই দেশ -এই জনপদ কি চিরদিন এই এমনি রবে ???

উইলিয়াম ব্লাক তার স্ট্যাটাসে বলেন, দেখামাত্রই গুলি করার নির্দেশ দাতা আজিজ আহমেদদেরকে দেখা মাত্রই সীমান্তের পথ ধরিয়ে দিন। বন্দুকের নল সীমান্তের ভেতরের দিকে নয়, বাইরের দিকে শক্তভাবে তাক করুন। দেশের ভেতর শুধু মানুষেরাই থাকবে, সরকারি অস্ত্রধারী কোন খুনি বাহিনী নয়। স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিন আমার বুকে গুলি করার পূর্বে তোমার খুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করো আগে....।

অবসরপ্র্রাপ্ত উচ্চপর্যায়ের সেনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল আমান আযমি লিখেছেন, "প্রাইমারি রোল" বাদ দিয়ে "সেকেন্ডারি রোল" এ ..(বিজিবি)। .আমাদের এই 2nd line force টা বর্ডারে BSF এর বিরুদ্ধে এমনটা মনোভাব দেখাতে পারে না কেন? BSF পাখির মত গুলী করে আমাদের নিরীহ মানুষ মারছে, আর উনারা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছেন। কই, একবার ও তো BSF এর বিরুদ্ধে একটা কথা বলতে শুনি না! যত সাহস উনাদের দেশি মানুষের বিরুদ্ধে! BGB এর প্রাইমারি রোল বর্ডারে, BSF এর বিরুদ্ধে লড়াই করা। সেকেন্ডারি রোল বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করা। অবস্থা দেখে মনে হয়, প্রাইমারি রোল বাদ দিয়ে সেকেন্ডারি রোল এ সাহসিকতা দেখাতেই আগ্রহ বেশি তাদের (বিজিবির)!

বিজিবি প্রধানের এই নির্দেশের পর যদি কোন মানুষকে গুলি করা হয় তাহলে তার সব দায়দায়িত্ব নিতে হবে বর্তমান ডিজিকে। আর জনমানুষও যদি এই কারণে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে যেভাবে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সেভাবে বিজিবির বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেয় তাহলে তার দায়দায়িত্বও তাকে নিতে হবে। যে কারণে বিজিবির অন্যান্য কর্মকর্তা ও সদস্যদেরও ডিজি আজিজের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া উচিত। একজন ব্যক্তির কারণে পুরোবাহিনীকে এভাবে জনগণের বিপক্ষে দাঁড় করানো যেতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন, সাবেক এক বিজিবি কর্মকর্তা।

সন্ত্রাসীদের গডফাদার হিসেবে খ্যাত বর্তমান বিজিবির ডিজি আজিজের নির্দেশ না মেনে বিজিবির উচিত ব্রাকে ফিরে যাওয়া এবং সীমান্ত রক্ষায় কাজ করা। আজিজ তার অপকর্মের পুরস্কার হিসেবে ডিজি হওয়ায় আনুগত্য দেখাবেই। কিন্তু পুরো বিজিবি তার মূল্য দিতে পারে না। পিলখানার ট্র্যাজিডির পর আর কোন নতুন ট্র্যাজিডির সম্মুখীন যাতে না হতে হয় সে বিষয়ে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক আরেক বিজিবি কর্মকর্তা।

উৎস : নিউজবিডিসেভেন, এক্সক্লুসিভ:/ ১৫ জানুয়ারী ২০১৫।

Post a Comment

Previous Post Next Post