প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকী বলেছেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করি না, তবে যতদিন বেঁচে থাকি শেখ হাসিনার কমিউনিস্ট লীগকে সমর্থন করবো না।’
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভার আয়োজন করে প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশন।
নূরে আলম বলেন, ‘গণতন্ত্রের মূলে হলো সহনশীলতার মাত্রা। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শুধুমাত্র গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামই করেননি বরং তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন এবং রাজনৈতিকভাবেই প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।’
ছাত্রলীগের সাবেক এ সভাপতি বলেন, ‘মোদি যদি আরেকবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন, তাহলে ভারতের নাম বদলে হিন্দুস্তান করা হবে। তিনি ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে মুসলমানদের তিনি কী করেছিলেন তা আপনাদের মনে থাকার কথা।’
তিনি বলেন, ‘আজকে যারা সোহরাওয়ার্দী এবং মাওলানা ভাসানীকে চেনেন না, তাদেরকে যদি বলা হয়- আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা কে? গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন কে?, তাহলে তারা একবাক্যে বলে দেবেন- শেখ হাসিনা।’
দেশে বর্তমানে প্রতিহিংসা, দুর্নীতি ও ক্ষমতার রাজনীতি চলছে জানিয়ে নূরে আলম বলেন, ‘বর্তমানে যারা সহনশীলতার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন তারা হয় পাগল, না হয় উন্মাদ। আমি মাঝে মাঝে পাগল হয়ে যাই।’
‘আমার যেমন বেনি/তেমন রবে/চুল ভেজাবো না’ জনপ্রিয় গানটি গেয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন- তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার গদি চাই। আর বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বলেন- তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সিংহাসন ফেরত চাই। দুই নেত্রী চায় কেয়ামত পর্যন্ত দেশের ক্ষমতায় থাকতে।’
শেখ হাসিনার একমাত্র শত্রু দুর্নীতি হওয়া উচিত ছিল জানিয়ে ছাত্রলীগের সাবেক এ সভাপতি বলেন, ‘শেয়ারবাজার, বেসিক ব্যাংক, ডেসটিনি ও হলমার্কে দুর্নীতি আপনারা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শীতলক্ষ্যা নদীকেও এরা লিজ দিয়েছে একটি নাম স্বর্বস্ব কোম্পানির কাছে। খোঁজ নিয়ে দেখুন গণভবনও তারা লিজ দিয়ে দিয়েছে কিনা?’
তিনি বলেন, ‘সংসদ হচ্ছে আইন প্রণয়নের জায়গা। আমি লিখে দিতে পারি- বর্তমান সংসদের ৮০ শতাংশ এমপি কার্যপ্রণালী জানেন না, এমনকি পড়েনও না। তারা জানেন কিভাবে সুযোগ পেলে খালেদা জিয়াকে কটাক্ষ করতে হয়।’
দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনে পরিণত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১/১১ সরকারের সময়ে দুদকের দায়ের করা নিজেদের নামের মামলাগুলো প্রত্যাহার করে নিলেন। সৌজন্যতার খাতিরে হলেও খালেদা জিয়া বা বিএনপি নেতাদের নামে করা ২/১টি মামলা প্রত্যাহার করতে পারতেন। আওয়ামী লীগের ২২ বা ৭২টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মধ্যে এখন দুদক একটি।’
সংগঠনের যুগ্ম-আহ্বায়ক এজাজ আহমেদ মুক্তারের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- নুরুল ফজল বুলবুল, সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক মন্ত্রী আবুল কাশেম।
দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/ ডিসেম্বর ৫, ২০১৪