আবদুল কাদের মোল্লা শহীদ হওয়ার দু’দিন পরের ঘটনা। আমার নিয়মিত কোম্পানির মাসিক টেনিং ক্লাশ চলছিলো কিন্তু পুরো ক্লাশই ছিলো প্রাণহীন।
বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে খানিক আলোচনার ফাঁকে আমি হঠাৎ বলে উঠলাম- ‘স্যার, আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি হয়েছে। তিনি তো মারা গেছেন, আমি আরো কিছু বলতে চাইছিলাম কিন্তু স্যার আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন- “না, তিনি মারা যাননি। বরং বলো তিনি শহীদ হয়েছেন।”
তারপর তিনি কুরআনের এই আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন- “ আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়, তাদেরকে তোমরা 'মৃত' বলো না। তারা তো আসলে জীবিত। কিন্তু তোমরা তা অনুধাবন করতে পার না। (সূরা বাকারা-১৫৪)
স্যার আমাদের আরো বললেন-
“শহীদ তো তাঁরাই যারা আল্লাহর রাহে সব কিছু তুচ্ছ করে জীবনের মায়া ত্যাগ করতে দ্বিধা করেননি।” স্যারের কথা গুলো শুনে সত্যিই চোখের পানি ধরে রাখা সম্ভব ছিলো না।
একজন মানুষকে এত লোকে ভালবাসতে পারে!! আসলে ভালোবাসা তো তাদেরই জন্যে যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে (সা.) ভালবেসেছেন এবং তাদের নির্দেশিত পথে চলেছেন।
পরদিন রাতে খাবার টেবিলে আমার স্ত্রী - আমাকে বলেছিলো “আবদুল কাদের মোল্লা শুধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি একটি জাতির আদর্শ।
ওরা কোনো ব্যক্তিকে ফাঁসি দেয়নি, বরং একটা জাতির আদর্শকেই ফাঁসি দিয়েছে।
ওরা যে কারণে তাঁকে ফাঁসি দিয়েছে ঠিক তার বিপরীতই ঘটবে। ঘটতে শুরু করেছে।
ওরা আল্লাহর নূর মুখের [ ফুৎকার ] দ্বারা নিভিয়ে দিতে চায়।
কিন্তু আল্লাহ্ তাঁর [ প্রত্যাদেশের ] আলো পূর্ণ করবেন, যদিও
অবিশ্বাসীরা [তা ] অপছন্দ করে থাকে।
আমার স্ত্রী বলেছিলো- ”আর এই পূর্ণ করবার দায়িত্ব দিয়েছেন সেই সকল মানুষদের যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালো বাসে। আর ওই ছেলেগুলোকে দেখো যারা আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। ওরা নিরস্ত্র হলেও ঈমানী শক্তিতে ওদের অন্তর পরিপূর্ণ।
আসমান ও জমীনের মালিক স্বয়ং আল্লাহ তাদের সাথে আছেন আর এ কারণেই ওরা হারবার নয়।
আবদুল কাদের মোল্লা শহীদ হওয়ায় তাঁর সন্তানেরা গর্ববোধ করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাতুল্লাহ্ লারজিন, শারমিন কিংবা হাসান জামিলদেরই শুধু গর্বের বিষয় এটা ?
না এটা আমাদেরও গর্বের।
কারণ তিনি একটি জাতির আদর্শ আর আমরা সেই জাতিরই সদস্য।
Md. Imdadul Hoque Rayhan এই আইডি থেকে কপি করা হয়েছে। ০৪ ডিসেম্বর ২০১৪।