আজ স্বৈরাচার পতন দিবস পালন করছে বিএনপি। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল আলোচনা সভা করেছে দলটি। দিবসটি উপলক্ষে এক বাণীতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, একদলীয় বাকশালী চেতনার দল ও আশির দশকের গণতন্ত্র হত্যাকারী স্বৈরাচার একত্রিত হয়ে দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্রমান্বয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করছে। এই অপশক্তিকে প্রতিহত করে গণতন্ত্রকে স্থায়ীরূপ দিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ৬ ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৯০ সালের এ দিনে দীর্ঘ নয় বছরের অগ্নিঝরা আন্দোলনের পর পতন ঘটেছিল সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদের। যে স্বৈরশাসক এরশাদ ‘৮২’র ২৪ মার্চ পেশাগত বিশ্বস্ততা ও শপথ ভেঙ্গে বন্দুকের নলের মুখে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ও বিচারপতি সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সাংবিধানিক রাজনীতি স্তব্ধ করেছিল।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে সাংবিধানিক রাজনীতি ছিল বহুপাক্ষিক ও বহুদলীয়। যার পুন:প্রবর্তন করেছিলেন, স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। স্বৈরাচার এরশাদ একে একে সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক বিকাশকে করেছিল বাধাগ্রস্ত। কিন্তু ছাত্র-জনতার মিলিত সংগ্রামে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে এ দিনে মুক্ত হয়েছিল আমাদের গণতন্ত্র।
’৯০-এর আন্দোলনে আপোষহীন নেত্রীখ্যাত বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আজকের এ দিনে আমি ‘৮২ থেকে ’৯০ পর্যন্ত রক্তস্নাত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আত্মদানকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এ স্মরণীয় দিনে আমি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্রের হেফাজতকারী দেশবাসীসহ সবাইকে।
গণতন্ত্র এখনো শংকা মুক্ত নয় উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের গণতন্ত্র বার বার হোঁচট খেয়েছে তার অগ্রযাত্রায়। কিন্তু এদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ সকল বাধাকে অতিক্রম করে গণতন্ত্রের পথচলাকে নির্বিঘœ করেছে। শত শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্র এখনো শংকা মুক্ত নয়। নিষ্ঠুর কতৃত্ববাদী একদলীয় শাসনের চরিত্রগুলো ক্রমশ: ফুটে উঠছে বর্তমান শাসক গোষ্ঠির আচরণে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ৫ জানুয়ারী একতরফা নির্বাচন করে আবারো জাতিকে একদলীয় নিষ্ঠুর শাসনের শৃঙ্খলে বন্দী করে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতাকে বিপন্ন করা হয়েছে।
সকল দলের মিলিত ইচ্ছায় নিরপেক্ষ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এরা সংবিধান থেকে মুছে দিয়েছে। এই অগণতান্ত্রিক অপশক্তি সংবিধান বর্ণিত জনগণের মৌলিক অধিকার ক্রমাগতভাবে হরণ করে যাচ্ছে। এই অপশক্তিকে প্রতিহত করে গণতন্ত্রকে স্থায়ীরূপ দিতে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/ ০৬ ডিসেম্বর ২০১৪,