কুড়িগ্রামে মধ্যযুগীয় কায়দায় মাদ্রাসা ছাত্রকে ১৪ ঘন্টা গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন করেছে ছাত্রলীগ সভাপতি

জহুরুল হক, কুড়িগ্রাম থেকে :- কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলায় মধ্যযুগীয় কায়দায় মাদ্রাসা ছাত্র তৈয়ব আলী (১৮) কে ১৪ ঘন্টা গাছের উপর উল্টোদিকে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক কিশোরীর বাড়িতে তাবিজ পুতে রাখার অভিযোগে তার উপর এ পৈশাচিক ঘটনা ঘটানো হয়। বর্তমানে তৈয়ব আলী রাজিবপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। চিকিৎসকরা তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, জেলার রাজিবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের মিয়াপাড়া গ্রামের প্রতিবন্ধি দিনমজুর সামান আলীর পুত্র তৈয়ব আলী পাশ্ববর্তি জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নের কাউনিয়ারচর পশ্চিমপাড়া কওমী মাদরাসায় ফারসী শ্রেণিতে পড়ে। পড়াশুনার পাশাপাশি সে ওই এলাকার চরপাড়া জামে মসজিদে অল্প বেতনে ইমামতি ও ছেলে মেয়েদের মসজিদেই কুরআন শিক্ষা দেয়। ঘটনার দিন ২১ মে বুধবার মসজিদে এশার নামাজ পড়ানোর সময় হারুয়াবাড়ি পূর্বপাড়া গ্রামের ছোরহাব আলীর পুত্র ডাংধরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি শাহজামাল হোসেন (৩৫) এর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তৈয়ব আলীকে তুলে নিয়ে যায়। তার অপরাধ সে ওই গ্রামের শাহজামাল মাষ্টারের কন্যা কাউনিয়ারচর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে প্রেম করার মানসে তার বাড়িতে কুরআনের আয়াত লিখে তাবিজ পুতে রেখেছে। এই অপরাধে তাকে গরুর দড়ি দিয়ে বেধে গাছে উল্টোদিকে ঝুলিয়ে রাতভর নির্যাতন করা হয়। এতে তৈয়ব আলী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে মাথায় পানি ঢেলে জ্ঞান ফিরলে দ্বিতীয়দফা মারপীট করা হয়। নারকীয় এ ঘটনায় কেউ প্রতিবাদ করেনি। উল্টো তৈয়ব আলীকে অপরাধী সাবস্থ্য করে ডাংধরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ ফটিক ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে।
তৈয়ব আলীর লজিং মাস্টার আব্দুর রশীদ জানান, ছেলেটি ছোটবেলা থেকেই আমার বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করছে। সে অত্যন্ত ভাল ছেলে। আমি তার কোন দোষ দেখি নাই। মিথ্যা অপবাদ দিয়া একটি গরীব মেধাবী ছাত্রের জীবন নষ্ট করছে ওই শাহজামাল মাষ্টার।
রাজিবপুর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল মামুদ জানান, রোগীর শরীরে অসংখ্য ক্ষত রয়েছে। মাথায় প্রচন্ড আঘাতের কারণে তার স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে পারে। এজন্য সে আবোল-তাবোল বকছে। সুস্থ হতে সময় লাগবে।
এ বিষয়ে ডাংধরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ ফটিক সেলফোনে জানান, আমি বিচার করে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘটনার মীমাংসা করে দিয়েছি। সে অসুস্থ হলে আমার করার কি আছে ?
উৎসঃ Dhakar News

Post a Comment

Previous Post Next Post