৫০ পৌর সভায় প্রার্থী চায় জামায়াত ||

আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলগতভাবে অংশ গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে না জামায়াত। তারপরেও দলটি চায় ২০ দলের প্রধান শরিক বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে বা স্বতন্ত্র ভাবে ৫০ পৌর সভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে।

এ ছাড়াও পৌরসভাগুলোর কাউন্সিলরের অন্তত ৩০ ভাগ পদে একক ভাবে প্রার্থী দিতে চাচ্ছে জামায়াত।

পৌর নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রশ্নে জোট প্রধান বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের আলোচনা শুরু হয়েছে। শিগগিরই আসন ভাগাভাগির বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। কোনো কারণে জোটে সমঝোতা না হলে স্বতন্ত্র ভাবে সব পদেই প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতি রয়েছে বলে জামায়াত সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দলের শীর্ষ নেতাদের বিচার, বিভিন্ন মামলায় দেশজুড়ে সক্রিয় নেতাকর্মীদের ধরপাকড়সহ নানা কারণে দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে দলীয় কার্যক্রম চালাতে পারছে না জামায়াত। এরই মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে দলটি নিষিদ্ধের আভাস দেয়ায় সারা দেশের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ অবস্থায় দলের প্রতি জনসমর্থন যাচাইসহ তৃণমূল নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে পৌরসভা নির্বাচনকে মাধ্যম হিসেবে দেখছে জামায়াত।

এছাড়া গত বছর অনুষ্ঠিত চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে প্রতিকূল পরিবেশেও জামায়াত সমথর্করা ভালো ফল করায় পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।

এবছর এপ্রিলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ২০ দলীয় জোট প্রার্থীদের বর্জন সত্ত্বেও জামায়াত সমর্থিত পাঁচ কাউন্সিলর প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। এসব নির্বাচনের অভিজ্ঞতার আলোকে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভালো ফলের আশা জেগেছে জামায়াত নেতাদের।

জামায়াতের এক নেতা জানান, সব পৌরসভায় সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাইসহ নির্বাচন করার প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে জামায়াত। সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যক্তিগতভাবে প্রচার কাজ চালানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে দল থেকে। তবে শরিক ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে আলোচনা করেই প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। এ বিষয়ে এরই মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপি নেতার সঙ্গে প্রার্থী ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

তিনি জানান, জামায়াতের টার্গেট জোটের পক্ষ থেকে মেয়র ও কাউন্সিলরের ৩০ ভাগ পদে প্রার্থী দেয়া। যেসব এলাকায় জামায়াতের অবস্থান ভালো সেগুলোকে বাছাই করে জয়ের আশা নিয়েই জোটের কাছে প্রার্থী তালিকা দেয়া হয়েছে। দুই- একদিনের মধ্যেই প্রার্থী ভাগাভাগির বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। তবে কোনো কারণে জোটের সঙ্গে সমঝোতা না হলে এককভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেয়া হতে পারে বলেও তিনি আভাস দেন।

এ বিষয়ে জামায়াতের এক আইনজীবী নেতা বলেন, কমপক্ষে অর্ধশত মেয়র পদে জোটের হয়ে প্রার্থী দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে জামায়াতের। কাউন্সিলর পদেও বেশসংখ্যক প্রার্থী দেয়া হবে। এ নিয়ে জোট নেতাদের সঙ্গে প্রাথমিক বৈঠক হয়েছে। আরও কয়েকটি বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক অথবা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জামায়াত পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

জানা গেছে, নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জামায়াতের নেতারা প্রাথমিকভাবে ‘নির্বাচন পরিচালনা কমিটি’ গঠন করে কাজ শুরু করেছেন। কেন্দ্রীয়ভাবেও দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের তত্ত্বাবধানে জামায়াত একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করেছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post