হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় সংখ্যালঘু পরিবারের এক শিশু ধর্ষণের সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছেন কাগাপাশা ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সামছুল আলম (৩৫)।
ধর্ষণের পরও স্থানীয়দের দেখে নেয়ার হুমকি দিলে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। পরে শিশুটির মা তার বিরুদ্ধে মামলা করলে শনিবার দুপুরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বানিয়াচং থানার ওসি নির্মলেন্দু চক্রবর্তী।
ধর্ষণের শিকার শিশুটি স্থানীয় ব্র্যাক স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাত ১টার দিকে ধর্ষণ করার সময় স্থানীয় লোকজন যুবলীগ নেতা সামছুল আলমকে হাতেনাতে আটক করে।
তবে, স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত সামছুল আলম ধর্ষণের পরও স্থানীয়দের দেখে নেয়ার হুমকি দিলে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
এদিকে, শনিবার সকালে শিশুর মা সামছুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। বিকালে বানিয়াচং থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। সামছুল বিবাহিত। তার দুটি সন্তান রয়েছে।
রোববার দুপুরে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে হবিগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আলমের আদালতে হাজির করলে আদালত যুবলীগ নেতা সামছুলকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার এজহারে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে ওই শিশুটি ঘরে ঘুমিয়েছিল। রাতে প্রতিবেশী সামছুল দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। শিশুর চিৎকারে তার মা তার কক্ষে ঢুকে সামছুলকে ধর্ষণ করতে দেখে চিৎকার দেন। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। তারা সামছুলকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন।
ওই সময় সামছুল আলম সেখানে উপস্থিত সবাইকে শাসিয়ে বলেন, এ ঘটনা নিয়ে কেউ বাড়াবাড়ি করলে তিনি তাদের দেখে নেবেন। তখন ওই এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মাহমুদ আলীকে ডেকে আনা হয়। মাহমুদ আলী রাত ২টার দিকে সামছুলকে অনুরোধ করে ওই ঘর থেকে বাইরে নিয়ে যান।
মাহমুদ আলী বলেন, সামছুল কাগাপাশা ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তার পরিবার এলাকায় যথেষ্ট প্রভাবশালী। এ কারণে ভয়ে কেউ তার কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে সাহস করে না।
ওই শিশুর মা বলেন, ঘটনার পরও সামছুল আমাদের শাসিয়ে গেছেন, যেন মামলা না করি। এমনকি সামছুলের পক্ষ নিয়ে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা আমাকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।
স্থানীয় মোড়লরা মামলার পরিবর্তে সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে চান বলে জানান ধর্ষণের শিকার শিশুর মা।
বানিয়াচং থানার ওসি নির্মলেন্দু চক্রবর্তী জানান, ধর্ষণের ঘটনায় ওই শিশুর মা বাদী হয়ে শনিবার সকালে একটি মামলা করেন। এরপর সামছুলকে গ্রেফতার করা হয়। মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমরা সব ধরনের আইনি সহযোগিতা করতে বাধ্য।
http://www.timenewsbd.com/news/detail/61451