অবাক করে দিয়ে কারাগারে থেকে বিয়ে করলেন তাহেরপুত্র বিপ্লব

কারাগারে বসেই বিয়ে করলেন লক্ষ্মীপুরের পৌর মেয়র আবু তাহেরের বড় ছেলে খুনের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি এইচ এম বিপ্লব। গতকাল শুক্রবার এই বিয়ে হয়।

বিএনপির নেতা ও আইনজীবী নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় আদালত বিপ্লবকে ফাঁসির দণ্ড দিয়েছিলেন। অবশ্য পরে রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমায় বিপ্লবের এই ফাঁসির দণ্ড মওকুফ হয়। তবে শিবিরের নেতা এ এস এম মহসিন হত্যা মামলায় তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন। বর্তমানে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারে আছেন।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে জেলা কারাগার ফটকে বিপ্লবের সঙ্গে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের লামচরী গ্রামের পণ্ডিত বাড়ির মৃত আবুল খায়েরের মেয়ে সানজিদা খায়েরের ফোনে বিয়ে হয়। বর-কনে মোবাইল ফোনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন। এরপর নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) কারা ফটকে গিয়ে কাবিনে বর বিপ্লবের সই গ্রহণ করেন।

কারা সূত্র জানায়, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তথা জেলা প্রশাসকের অনুমতি সাপেক্ষে এই বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়।

এ বিষয়ে গত রাতে মুঠোফোনে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক এ কে এম টিপু সুলতান বলেন, কনের সম্মতি থাকলে কাজি সাহেব কারা ফটকে গিয়ে বরের সই নিয়ে বিয়ে পড়াতে পারেন। কারাবিধি অনুযায়ী, এ বিষয়ে অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিপ্লবের বাবা পৌর মেয়র আবু তাহেরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ অনুমতি দেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের পরপরই কনেকে তাঁর বাড়ি থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিপ্লবের বাবা আবু তাহেরের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও আইনজীবী নুরুল ইসলামকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তাঁর লাশ কয়েক টুকরা করে মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় আদালত তাহেরপুত্র বিপ্লবকে ফাঁসির দণ্ড দেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই সাজা মওকুফের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন বিপ্লব। ২০১১ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান মৃত্যুদণ্ড মাফ করে দেন। পরের বছর রাষ্ট্রপতি আরও দুটি হত্যা মামলায় (মহসিন ও কামাল হত্যা) বিপ্লবের যাবজ্জীবন সাজা কমিয়ে ১০ বছর করেন।

এর আগে ২০০৯ সালে স্কুলছাত্র জাহিদ হত্যা মামলা ও এতিম খানায় অগ্নিসংযোগের মামলা থেকে বিপ্লবকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা’ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে মামলা দুটি প্রত্যাহার করা হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদক/দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/০২ আগষ্ট ২০১৪

Post a Comment

Previous Post Next Post