ঘুষ দুর্নীতিতে দুদকের অর্ধশত কর্মকর্তা

ঘুষ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন খোদ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারাই। প্রায় অর্ধশত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অবৈধ সম্পদের নোটিশ, অনুসন্ধান, মামলা ও চার্জশিটের ভয় দেখিয়ে ঘুষ দাবি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগীদের অনেকেই দুদকে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার সাহস না পেয়ে বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে এসব অভিযোগ করছেন। এমন কি ভুক্তভোগীরা তাদের মোবাইল ফোনের ভয়েস কল রেকর্ডও অভিযোগের সঙ্গে জমা দিয়েছেন।

দুদকের একটি সূত্রে জানা গেছে, দুদকের একাধিক কর্মকর্তার মোবাইলে অবৈধ অর্থ লেনদেনের কথোপকথনের রেকর্ড পেয়েছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। তারা সেগুলো যাচাই বাছাই করছে। এরপর তাদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দুদক কমিশনারদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

সূত্রটি আরো জানায়, এ ধরনের অভিযোগ রয়েছে দুদকের উপ পরিচালক, সহকারী পরিচালক পর্যায়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ কারণে প্রায় অর্ধশত কর্মকর্তার ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।

এদিকে দুদক কর্মকর্তাদের দাবি, তাদের নাম পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারক চক্র এ ধরনের ঘুষ লেনদেন করছে। এছাড়া নিজেদের মধ্যে কেউ দুর্নীতি করছে কি-না সেটা দেখার জন্য দুদকের অভ্যন্তরীণ কমিটি রয়েছে। এ পর্যন্ত যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ঘুষ নেয়ার অভিযোগ গত পাঁচ বছরে নিজেদের ৭৬ জন কর্মীর বিরুদ্ধে নিজস্ব আইনে মামলা দায়ের করেছে দুদক। এর মধ্যে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৪৭ জনের শাস্তিও হয়েছে। চলতি বছরে দুদকের একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

গত ১৭ জুন দুদকের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা করেছে দুদক। এ দুজনের বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ৩৭ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ এবং আরও ২০ লাখ টাকা ঘুষ দাবির তথ্য পায় দুদক। এ অভিযোগ যাচাই-বাছাইয়ের পর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। এ ছাড়া অনিয়ম ও বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে গত মাসে দুদকের দুই কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে যেতে হয়েছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন অভিযোগকারী জানিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রে যাচাই বাছাই না করে তাদের কাছে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এ নোটিশের জবাব না দেয়ায় দুদক কর্মকর্তারা তাদেরকে অযথা হয়রানি করেছেন। এতে ব্যবসায়ীরা সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, এ ধরনের অভিযোগ থাকলে তা দুদককে জানাতে হবে। দুদকের নামে কেউ চাঁদা বা ঘুষ দাবি করলে দুদকের এই (৯৩৫২৫৫২) ফোন নম্বরে জানানোর জন্য তিনি অনুরোধ করেন।
উৎসঃ   ঢাকাটাইমস

Post a Comment

Previous Post Next Post