সরকার জামায়াতকে গণবিচ্ছিন্ন করতে যেয়ে নিজেরাই গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে --- নূরুল ইসলাম বুলবুল

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী সেক্রেটারী নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, সরকার জামায়াতকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে দলন-পীড়ন, জুলুম-নির্যাতন, হত্যা-সন্ত্রাস, গুম-অপহরণ ও নৈরাজ্যের পথ বেছে নিয়েছে। কিন্তু কোন বাধায় জামায়াতের ক্রমবর্ধমান অগ্রযাত্রাকে রোধ করতে পারবে না বরং সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা ও জুলুম-নির্যাতন উপেক্ষা করেই জামায়াত কাঙ্খিত লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে। তিনি গণমানুষের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করার জন্য সংগঠনের সকল স্তরের জনশক্তির প্রতি আহবান জানান।

তিনি আজ রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর ভাটারা থানার উদ্যোগে ওয়ার্ড দায়িত্বশীল শিক্ষা বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। থানা আমীরের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী আব্দুল কাইয়ুমের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত র্ছিলেন জামায়াত নেতা মোঃ আবুল কাসেম, সিরাজুল ইসলাম ও আনোয়ারুল হক মোল্লা প্রমূখ।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, দেশ পরিচালনায় সীমাহীন ব্যর্থতা, গণবিরোধীতা, জনগণের উপর জুলুম-নির্যাতন, লুটপাট ও বেপরোয়া দুর্নীতির কারণে সরকার গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের পায়ের তলায় মাটি নেই বলেই তারা ৫ জানুয়ারীর তামাশা ও ভাঁওতাবাজীর নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা এসে জনগণের উপর ছড়ি ঘোরাতে শুরু করেছে। কথিত নির্বাচনে ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা বিশ্ব ইতিহাসে নজীরবিহীন এবং জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে পরিহাস ও প্রতারণা ছাড়া কিছু নয় । তাই তথাকথিত এই নির্বাচন ও গঠিত সরকার কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তিনি সময় থাকতে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে অবিলম্বে অবৈধ সংসদ বিলুপ্ত ও সরকারকে পদত্যাগ করে একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার কায়েমের আহবান জানান। অন্যথায় দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে জালিম সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার কায়েম করা হবে।

তিনি বলেন, সরকার বিরোধী মত দমন করে দেশে একদলীয় বাকশালী ও ফ্যাসীবাদী সরকার কায়েমের জন্য গোটা দেশকেই মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। ছাত্রগীগের সন্ত্রাসীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির নেতার পা বিচ্ছিন্ন করে ফেললেও পুলিশ কোন মামলা নিচ্ছে না। অথচ সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে পর্দানশীন ছাত্রীদের গ্রেফতার করে কথিত ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দ্রুত বিচার আইনে মামলা ও রিমান্ডের আবেদন করা হচ্ছে। যা কোন সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না। তারা শুধু বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং তারা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিজেরাই খুনোখুনীতে লিপ্ত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের ৭ খুন, ফেনির ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান হত্যা ও মিরপুরের পল্লবী কালসীতে বিহারী ক্যাম্পে নারকীয় হত্যাকান্ডের ঘটনা সে সত্যেরই প্রমাণ বহণ করে। চাঞ্চল্যকর হত্যা মামালার আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুড়ে বেড়ালেও তাদেরকে আটক করা হচ্ছে না। এতে প্রমাণ হয় সরকার বেসামাল। কিন্তু জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে অতীতে কোন স্বৈরাচারের শেষ রক্ষা হয়নি, আওয়ামী লীগেরও শেষ রক্ষা হবে না।

তিনি আরও বলেন, সরকার জামায়াতকে গণবিচ্ছিন্ন করতে যেয়ে নিজেরাই গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সরকারের অপপ্রচার ও সীমাহীন জুলুম-নির্যাতনের পরও জামায়াতের আপন গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনের ফলাফলে সে সত্যেরই প্রমাণ মেলে। জামায়াতের গণমুখী রাজনীতি, আদর্শ ও মূল্যবোধ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। ফলে জামায়াত এখন গণমানুষের কাছে আস্থাশীল ও অধিকতর গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক দল। তাই জনগণকে বাকশালী দুঃশাসন থেকে মুক্ত করতে এবং সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ও গণতন্ত্র পূণঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জামায়াত নেতাকর্মীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি অবৈধ ও জুলুমবাজ সরকারের পতন ঘটিয়ে নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার কায়েমের জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান এবং আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও সাবেক আমীরে জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আযমসহ আটক নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করেন।

উৎসঃ জামায়াত প্রচার বিভাগ

Post a Comment

Previous Post Next Post