সেনবাগ প্রতিনিধি : দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ :
গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে নোয়াখালীর সেনবাগের ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর এলাকা সহ প্রায় ১’শ ১০টি গ্রামের বিস্তর্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে শত শত মৎস খামার। ভারী বর্ষনে ছোট ফেনী নদীর প্রবল স্রোতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, স্কুল- মাদ্রাসা পানিতে ডুবে গেছে। গত ২/৩ দিন এসব এলাকার ৪/৫ ফুট পানির নিচে গ্রামীন সড়ক। ভেঙ্গে পড়েছে গ্রামীন যোগাযোগ ব্যবস্থা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করে অনেক প্রতিষ্ঠান সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পয়ঃনিষ্কাশনসহ স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। খাদ্য ও বিশুব্ধ পানি সংকট দেখা দিয়েছে। এই দিকে রোববার দিনভর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উদয়ন দেওয়ানের নেতৃত্বে বন্যা প্লাবিত এলাকা স্বরজমিনে পরিদর্শন করেন। শেষে ক্ষতিগ্রস্ত লোকের জন্য ১শ’ মেট্রিক টন খয়রাতি সাহায্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার তেমুহানী আবদুর রশিদ উচ্চ বিদ্যালয়, মাহতাবপুর মাদ্রাসা, কানকিরহাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, কানকিরহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আছিরা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়, বাতাকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়, ছাতারপাইয়া উচ্চ বিদ্যালয়, এম এ আলী উচ্চ বিদ্যালয়, পরিকোট উচ্চ বিদ্যালয়, গাজীহাট উচ্চ বিদ্যালয়, ডমুরুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, এনায়েতপুর রহমতিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, টুংকু আবদুল রহমান মেমোরিয়াল একাডেমী, হাজী মোকছুদুর রহামন উচ্চ বিদ্যালয়, নলুয়া উচ্চ বিদ্যালয়, ছিলানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, রাজারামপুর রশিরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, কল্যান্দি ফয়জুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা, মইজদীপুর আশরাপুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা, তাহিরপুর তামিরুল উম্মাত দাখিল মাদ্রাসা।
এছাড়াও উপজেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা, ছিলাদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাহতাবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাতারপাইয়া পল্লী মঙ্গল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মানবকল্যান একাডেমী, বিদ্যাবন একাডেমী, ডালুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ অনেক স্কুল মাদ্রাসা সাময়িক বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
তবে এ সংক্ষা অনেক বেশী বলে জানাগেছে। গাছ উপড়ে পড়ে বিদ্যুত সঞ্চালন লাইন বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুত বিভাগের লোকজন দিনরাত কাজ করে সরবরাহের চেষ্টায় রয়েছে। সঞ্চালন লাইনে গাছ উপড়ে পড়ে তার চিড়ে ৩দিন বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
সেনবাগ পল্লি বিদ্যুতের জোনাল অফিসের (ডিজিএম) দেলোয়ার হোসেন মিয়া জানান, বৃষ্টি ও বন্যার কারনে বেশির ভাগ রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় গাড়ী নিয়ে লাইন সচল করা খুবেই কষ্ট কর। আমাদের কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে বৃষ্টি ও বন্যার কারনে কর্মীরা কাজ করতে নানা সমস্যার সমুক্ষীন হচ্ছে।
রোববার দিন ভর উপজেলা নির্বাহী কর্মকার্ত উদয়ন দেওয়ান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা গোলাম মাওলা, কৃষি কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন, কেশারপাড় ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল হক, ছাতারপাইয়া ইউপির চেয়রারম্যান আবদুল রহামান, অর্জনতলা সাহাজাহান ভুইঁয়া বন্যা প্লাবিত উপজেলার ডমুরুয়া ইউপির, জিরুয়া, হরিকাটা, সাতবাড়ীয়া, কেশারপাড় ইউপির মজিরখিল, উন্দানিয়া, লুদুয়া, কালারাইতা, খাজুরিয়া, ইটবাড়ীয়া, কলাবাড়ীয়া ও বীরকোট, ছাতারপাইয়া ইপির পশ্চিম ও পুর্ব ছাতারপাইয়া সোনাকান্দি, বসন্তপুর, লেমুয়া ঠনারপাড়, বিরাহীপুর, ছিলাদী, মাহতাবপুর ও পাছতুফা, অজুর্নতলা ইউপির হাটিরপাড়, চাচুয়া, ইদিলপুর, উত্তর ও দক্ষিন মানিক পুর, নাজিনগর, ছিলোনিয়া, দৌলতপুর ও গোরকাটা সরজমিনে পরিদর্শন করেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ছিদ্দিকী জানান, তিনি বিষয়টি অবগত তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে স্বরজমিনে তদন্ত করে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয় গুলোর তালিকা প্রেরন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর সভায় ৪৫ টি গ্রামে ৭০ হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ১শ’ মেট্রিক টন সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
সেনবাগ প্রতিনিধি : দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/২৭ জুলাই ২০১৫।