রিমান্ডে যে কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিন নেতা! ||

ঢাকা : পুলিশের রিমান্ডে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ তিন নেতার কেউই নাশকতার দায় স্বীকার করতে চাচ্ছেন না। জিজ্ঞাসাবাদে বিএনপির তিন নেতার রিমান্ডে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনের সব কিছুই দেখভাল করছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও লন্ডনে থাকা তার পুত্র ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। টেলিফোনে তারা তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালুকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এর মধ্যে মির্জা ফখরুল কে দুই দফায় ছয় দিন, রিজভীকে দুই দফা আট দিন রিমান্ডে নেওয়া হয়। অপরদিকে ফালু তিন দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।

শুয়ে বসে দিন কাটালেও প্রতিদিনই গভীর রাতে তাদের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কখনও পৃথকভাবে আবার কখনও তিন নেতাকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের বিশেষ কোনও সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। তবে প্রয়োজন ও চাহিদানুযায়ী খাবার দেওয়া হচ্ছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, মানবাধিকার সমুন্নত রেখে কয়েকটি সুর্দিষ্ট বিষয়ে বিএনপির এই সিনিয়র নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে যেসব অভিযোগ রয়েছে, মূলত সেসব বিষয়েই জানতে চাওয়া হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সূত্র জানায়, কারা পেট্রোল বোমা মারছে, কারা অর্থ দিচ্ছে এবং কার নির্দেশে বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে-ঘুরে ফিরে এই তিনটি প্রশ্নই জানতে চাওয়া হচ্ছে তাদের কাছে।

গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন তারা কেউই পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ বা বাসে আগুন দিয়ে সাধারণ মানুষ হত্যার পক্ষে নন। এতে বিএনপির জনপ্রিয়তাও আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাচ্ছে। বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। আন্তর্জাতিক মহলে বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে। তবে তারা সাহস করে বিএনপির চেয়ারপারসনকে সরাসরি বলতেও পারছেন না। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা রিমান্ডে থাকা নেতাদের এসব জবাবে সন্তুষ্ট নন। তাই দফায় দফায় রিমান্ডে নিয়ে ‘প্রকৃত তথ্য’ জানার চেষ্টা করছেন তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তিনি নাশকতার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না। আত্মগোপনে থেকে কেবল খালেদা জিয়ার কাছ থেকে পাওয়া বিবৃতিটি পড়তেন। অন্য কোনও ঘটনা সম্পর্কে তিনি অবহিত নন।

মোসাদ্দেক আলী ফালু জানিয়েছেন, তিনি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হলেও দলীয় রাজনীতিতে তার কোনও ভূমিকা নেই। খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ার পর তিনি মালয়েশিয়া থেকে তার মরদেহ ঢাকায় নিয়ে আসেন এবং খালেদা জিয়ার পরিবারের কিছু বিষয় দেখভাল করেন।

দৈনিক সেনবাগের কণ্ঠ/ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।

Post a Comment

Previous Post Next Post